দেশে করোনার দক্ষিণ আফ্রিকার ধরন বেশি ছড়াচ্ছে : আইসিডিডিআর,বি
বাংলাদেশে বর্তমানে নভেল করোনাভাইরাসের দক্ষিণ আফ্রিকার ভ্যারিয়ান্টটি সবচেয়ে শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআর,বি) গতকাল বুধবার এ খবর জানিয়েছে।
আইসিডিডিআর,বি তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক খবরে জানিয়েছে, প্রতিষ্ঠানটি গত ডিসেম্বর থেকে, সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সঙ্গে মিলে করোনাভাইরাসের বিভিন্ন ভ্যারিয়ান্টের ওপর নজরদারি বা গবেষণা শুরু করে।
আইসিডিডিআর,বি জানিয়েছে গত ১ জানুয়ারি থেকে ২৪মে মার্চে পর্যন্ত সময়ের মধ্যে মোট ১৬ হাজার ২৬৫টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে দুই ৭৫১টি নমুনা পজিটিভ চিহ্নিত হয়। বলা হয় গত ৬ জানুয়ারি প্রথম করোনার যুক্তরাজ্যের (ইউকে) ভ্যারিয়ান্ট শনাক্ত হয়। এবং মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত এই ভ্যারিয়ান্টটি বাংলাদেশে বৃদ্ধি পায়।
কিন্তু মার্চের তৃতীয় সপ্তাহে দেখা যায় যে, বাংলাদেশে দক্ষিণ আফ্রিকার ভ্যারিয়ান্টটি সবচেয়ে শক্তিশালী হয়ে উঠেছে।
আইসিডিডিআর,বি জানিয়েছে, গত ১৮ থেকে ২৪ মার্চের মধ্যে প্রতিষ্ঠানটির বিজ্ঞানীরা করোনা রোগীদের প্রায় ৫৭টি নমুনার জিনোম সিকোয়েন্স বিশ্লেষণ করেছেন। এর মধ্যে ৪৬টি অর্থাৎ ৮০ শতাংশেরও বেশি দক্ষিণ আফ্রিকার করোনা ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে।
এর আগের সপ্তাহে ১২ থেকে ১৭ মার্চের মধ্যে আইসিডিডিআর,বি ৯৯টি করোনা রোগীর নমুনার জিনোম সিকোয়েন্স বিশ্লেষণ করে ৬৪টি অর্থাৎ ৬৪ শতাংশের বেশি দক্ষিণ আফ্রিকার ভ্যারিয়ান্ট পেয়েছে। অথচ এর আগ পর্যন্ত দেশে দক্ষিণ আফ্রিকার ভ্যারিয়ান্ট পাওয়া যায়নি।
আইসিডিডিআর,বি বলছে, দক্ষিণ আফ্রিকা ভ্যারিয়ান্টের আবির্ভাব বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ক্ষেত্রে নাটকীয় পরিবর্তন আনে।
মার্চের চতুর্থ সপ্তাহে দেখা যায়, দেশে শনাক্ত করোনাভাইরাসের ধরনগুলোর মধ্যে এখন ৮১ শতাংশই দক্ষিণ আফ্রিকার ভ্যারিয়ান্ট।
নভেল করোনাভাইরাসের নানা ধরনের মধ্যে ইউকে ভ্যারিয়ান্ট, দক্ষিণ আফ্রিকা ভ্যারিয়ান্ট ও ব্রাজিল ভ্যারিয়ান্টই সারা বিশ্বে ছড়িয়েছে সবচেয়ে বেশি।
আইসিডিডিআর,বি বলছে, এই তিনটি ধরনের সংক্রমণের হার বেশি, এবং এদের জিনগত পরিবর্তনও ঘটে বেশি। ফলে এখন ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা এবং রোগী ব্যবস্থাপনার দিকটি নতুন করে ভাবতে হবে বলে তারা বলছে।