দেশবিরোধী কোনো চুক্তি বঙ্গবন্ধুকন্যার হাত দিয়ে হয়নি : কাদের
ভারতের সঙ্গে সম্প্রতি করা চুক্তির বিস্তারিত জনসমক্ষে প্রকাশের দাবিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে বিএনপির চিঠি দেওয়া প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘দেশবিরোধী কোনো চুক্তি বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার হাত দিয়ে কখনো হয়নি, হবেও না।’ আজ রোববার আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি-বাংলাদেশের (এআইইউবি) অডিটোরিয়ামে সড়ক নিরাপত্তা ও সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ বিষয়ক আলোচনা সভা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমি জোর গলায় বলতে পারি, বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশের স্বার্থ বিকিয়ে দিয়ে কোনো চুক্তি করবেন না। আর চুক্তি যা হয়েছে, এটা দিবালোকের মতো পরিষ্কার। চুক্তির মধ্যে কোনো গোপনীয়তা নেই। নতুন করে এটার আবার কী ব্যাখ্যা দেওয়া হবে? চুক্তি তো চুক্তি, চুক্তি কি গোপন করে রাখা যায়?’
এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক দিল্লি সফরে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের হওয়া চুক্তির বিষয়ে জানতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে দলের পক্ষ থেকে চিঠি পৌঁছে দিয়েছেন বিএনপির দুই যুগ্ম মহাসচিব। আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল ও খায়রুল কবীর খোকন তেজগাঁওয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে গিয়ে চিঠি পৌঁছে দেন।
চিঠি পৌঁছে দিয়ে সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের বলেন, বিএনপির মহাসচিব স্বাক্ষরিত প্রধানমন্ত্রী বরাবর একটি চিঠি নিয়ে এসেছিলাম। ওই চিঠিতে বলা আছে, অতি সম্প্রতি ভারত সফর ও অন্যান্য দেশে সফরের সময়ে সেসব দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের যে চুক্তিগুলো হয়েছে, সংবিধান অনুযায়ী সেই চুক্তিগুলোকে জনসমক্ষে প্রকাশ করা এবং তার মধ্যে দেশের স্বার্থের হানিকর কিছু হয়েছে কি না, সেটা পর্যালোচনা করার সুযোগ দেওয়া হোক।
আলাল বলেন, ‘আমরা দেখেছি শুধু জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী কথা বলেছেন। কিন্তু এ সম্পর্কে জাতীয় সংসদে আলোচনা হয়নি, এমনকি রাষ্ট্রপতির কাছেও এই ফাইল গিয়েছে কি না এ বিষয়ে সাধারণ জনগণ কিছু জানে না। কিন্তু সংবিধানের ১৪৫/ক ধারায় এটা সংসদে পেশ করার এবং জানার জনগণের অধিকার রয়েছে। জনগণের সমর্থিত দল হিসেবে বিএনপি এই দায়িত্ব পালনে অগ্রসর হয়েছে। আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছি। অবিলম্বে এটা সংসদের আলোচনার টেবিলে নিয়ে আনা হোক। যাতে এটা পাবলিক ডিসকাশনের ব্যবস্থা হয়।’
সংসদে প্রতিনিধি আছে, সেখানে উত্থাপন না করে এখানে কেন দিলেন—এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আলাল বলেন, ‘জাতীয় সংসদে আমাদের যাঁরা সদস্য আছেন, তাঁরা কয়েক দফা এ ব্যাপারে কথা বলার চেষ্টা করেছেন, নোটিশ দিয়েছেন। তাঁদের সে নোটিশ গ্রহণ করা হয়নি। কথা বলার সুযোগ দেওয়া হয়নি। আমরা অনন্যোপায় হয়ে এখানে চিঠি দিলাম।’
ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বিভিন্ন চুক্তির ডকুমেন্ট চেয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী বরাবর চিঠি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয় দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে। শনিবার রাতে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, দু-একদিনের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি পৌঁছানো হবে।