করোনাভাইরাসের মহামারি প্রতিরোধে ‘দেশবাসীকে ঘরে থাকার এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বিধি মেনে চলার' আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

আজ সোমবার ঈদের দিন রাতে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যরা সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। সেখান থেকে বের হয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলীয় প্রধানের এই বার্তা সাংবাদিকদের জানান।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এবং এই সময়ে সবাইকে ঘরে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।’

রাত সাড়ে ৭টা থেকে ৯টা পর্যন্ত গুলশানের ‘ফিরোজা‘য় দোতলায় এই সাক্ষাত হয়। গত ২৫ মার্চ সরকারের নির্বাহী আদেশে সাজা স্থগিত করলে ছয় মাসের জন্য জামিনে মুক্ত হন খালেদা জিয়া। এর পর স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে দলীয় প্রধানের এটিই প্রথম আনুষ্ঠানিক সাক্ষাত।

সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু দলীয় প্রধানের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

বেরিয়ে এসে মির্জা ফখরুল গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আপনাদের মাধ্যমে খালেদা জিয়া দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এই যে মহাসংকট করোনাভাইরাসের মহামারি সমস্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে মোকাবিলা করার জন্য দলের নেতা-কর্মীদের প্রতি ম্যাডাম আহ্বান জানিয়েছেন।’

বিএনপির মহাসচিব আরো বলেন, ‘দেশবাসীর প্রতিও তিনি (খালেদা জিয়া) আহ্বান জানিয়েছেন যে, বাড়িতে থাকুন, একটু কষ্ট করুন। বাড়িতে থেকেই এই সংক্রমণকে প্রতিরোধ করতে হবে- একথা তিনি বার বার বলেছেন। তিনি আহ্বান জানিয়েছেন, জনগণ যেন ঘরে থাকে এবং এই মহামারিকে প্রতিরোধ করবার জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার যে সব বিধান দিয়েছে তা যেন তারা মেনে চলে।’

‘সেই সঙ্গে ম্যাডাম (খালেদা জিয়া) সন্তুষ্টিও প্রকাশ করেছেন যে, এতো প্রতিকূল অবস্থার মধ্যেও বিএনপির নেতা-কর্মীরা দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়াতে চেষ্টা করেছেন। তিনি বার বার বলেছেন, এখন সাহস না হারিয়ে দাঁড়াতে হবে।’

মির্জা ফখরুল আরো বলেন, ‘এই চরম একটা সংকটের সময়ে যখন আপনার সামাজিক দূরত্বকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। তার মধ্যেও উনি (খালেদা জিয়া) আমাদেরকে সময় দিয়েছিলেন। আমরা পুরোপুরি নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে, আমাদের নেত্রীকে নিরাপদ রাখার জন্য, আমরা সবাই স্পেশাল পিপিই পড়ে, হাতে গ্লাবস নিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করেছি।’

খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘শারীরিক অবস্থা আমি আগেও বলেছি, উনার কোনো ইম্প্রুভমেন্ট হয়নি। ইম্প্রুভমেন্টের মধ্যে যেটুকু হয়েছে আগে থেকে মানসিক অবস্থাটা উনার অনেক ভালো হয়েছে, শারীরিক অবস্থার তার খুব বেশি পরিবর্তন হয়নি।’

এর আগে গত ১১ মে খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাত করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

ঈদের নামাজের পরে সকাল ১১টায় স্থায়ী কমিটির সদস্যদের নিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে দলের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারত করেন।