দুর্নীতির মামলায় বরিশালের সাবেক মেয়রসহ ৫ জনের কারাদণ্ড
দুর্নীতির মামলায় বরিশাল সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র বিএনপিনেতা আহসান হাবিব কামালসহ পাঁচজনকে সাত বছর করে কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার বরিশালের বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মহসিন উল হক এই রায় দেন। রায়ে সাবেক মেয়র কামাল ও জাকির হোসেন নামের এক ঠিকাদারকে কারাদণ্ডের পাশাপাশি এক কোটি টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়।
দণ্ডপ্রাপ্ত অন্য তিনজন তৎকালীন বরিশাল পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ইসহাক ও নুরুল ইসলাম এবং উপসহকারী প্রকৌশলী মো. আবদুস সাত্তার। রায় ঘোষণার সময় আহসান হাবিব কামালসহ সব আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণার পর তাঁদের জেলহাজতে পাঠানো হয়।
আহসান হাবিব কামাল সাবেক বরিশাল পৌরসভার মেয়র ছিলেন। পৌরসভা থেকে সিটি করপোরেশন গঠিত হলে তিনি দুই দফা মেয়রের দায়িত্ব পালন করেন।
মামলা ও আদালত-সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দণ্ডাদেশ পাওয়া ব্যক্তিরা ১৯৯৫ সালের ২১ ডিসেম্বর থেকে ১৯৯৬ সালের ৩ জুন তারিখের মধ্যে তৎকালীন বরিশাল পৌরসভা এলাকায় টেলিফোন শিল্প সংস্থা কর্তৃক ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা মেরামত দেখিয়ে টেলিফোন শিল্প সংস্থার জাল প্যাড প্রস্তুত করে ভুয়া দরপত্র সৃষ্টি করেন। সেই সঙ্গে ভুয়া ঠিকাদার নিয়োগ করে প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে বরিশাল ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেডে চলতি হিসাব খোলেন। ওই হিসাবে টেলিফোন শিল্প সংস্থা কর্তৃক প্রদত্ত চারটি চেকের মাধ্যমে মোট ৩৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা উত্তোলন করে ১১ লাখ ৯৯ হাজার ৩৭১ টাকার রাস্তার মেরামত কাজ দেখান এবং একে অপরের সহযোগিতায় ক্ষমতার অপব্যবহার করে সরকারি ২৭ লাখ ৬০ হাজার ৬৩৯ টাকা আত্মসাৎ করেন। ওই ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপপরিচালক মো. আবদুল বাসেত ২০০২ সালের ১১ অক্টোবর একটি মামলা করেন। ২০১১ সালের ১৯ জুলাই উপপরিচালক আবদুল বাসেত ও সহকারী পরিচালক এম এইচ রহমতউল্লাহ আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বিচারক আজ আসামিদের বিরুদ্ধে রায় ঘোষণা করেন।
রায় ঘোষণার পর সঠিক বিচার পাননি বলে দাবি করেন আহসান হাবিব কামালের আইনজীবী মজিবর রহমান নান্টু। চেকে সই ও আনুষঙ্গিক দাপ্তরিক দায়িত্বে থাকা পৌরসভার তৎকালীন মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তাকে দুদক কর্তৃক আসামির তালিকা থেকে রেহাই দেওয়ার বিষয়েও বিস্ময় প্রকাশ করেন তিনি।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানার জন্যে দুদকের পক্ষে মামলা পরিচালনাকারী আইনজীবী মাসুদুল হক খানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে টেলিভিশনের সামনে কোনো বক্তব্য দিতে তিনি রাজি হননি।