তিন দিন পর বন্ধ হলো নলকূপ থেকে অনবরত গ্যাস নির্গমন
অবশেষে তিন দিন পর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার শেরে বাংলা উচ্চ বিদ্যালয়ের নলকূপের গর্ত থেকে অবিরাম বালু ও গ্যাস নির্গমন বন্ধ হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাতে বালু ও গ্যাস নির্গমন বন্ধ হয় বলে জানা গেছে।
বায়েক ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও শেরে বাংলা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আল মামুন ভূঁইয়া জানান, নলকূপ থেকে অবিরত গ্যাস ওঠার ঘটনায় বিদ্যালয়ের মূল ভবন ও সীমানা প্রাচীরের অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এগুলো মেরামতের জন্য চেষ্টা চলছে। পরবর্তী সময়ে আর গ্যাস নির্গমন না হলে আগামীকাল রোববার থেকে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম স্বাভাবিক হবে।
এ ব্যাপারে স্থানীয় লোকজন জানায়, তারা অনেক আতঙ্কে ছিল। এখন অনেকটা স্বস্তি ফিরে এসেছে। তারা এখন বাড়ির চুলায় আগুন জ্বালাতে পারছে। রান্নার আর সমস্যা হচ্ছে না।
কসবা গ্যাস ফিল্ডের প্ল্যান্ট অপারেটর রেজাউল করিম জানান, নলকূপের পানি কয়েক ফুট নিচে নেমে গেছে। পরিস্থিতি একেবারে স্বাভাবিক রয়েছে।
গত ১ ফেব্রুয়ারি কসবা উপজেলার বায়েক ইউনিয়নের শেরে বাংলা উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য সুপেয় পানির ব্যবস্থা করতে নলকূপ বসানোর কাজ শুরু করে কর্তৃপক্ষ। পরে ৫ ফেব্রুয়ারি প্রায় সাড়ে ৫০০ ফুট খনন করার পর হঠাৎ করে বিকট শব্দে গ্যাস বের হতে থাকে।
এরপর পুরো স্কুলের মাঠ পানি ও বালুতে ভরে যায়। পরে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয় ওই স্কুল। এরপর মাঠ বিপজ্জনক চিহ্নিত করে লাল পতাকা উড়িয়ে দেওয়া হয়। পানি ও বালু স্কুলের সীমানা পেরিয়ে ছড়িয়ে পড়ে আশপাশেও। এতে এলাকার লোকজন আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্য এবং বাপেক্সের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
ইউপি চেয়ারম্যান ও শেরে বাংলা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আল মামুন ভূঁইয়া জানিয়েছিলেন, বিদ্যালয়ের পুরাতন টিউবওয়েলটি কাজ না করায় সরকারিভাবে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে একটি টিউবওয়েল বসানোর কাজ চলছিল। প্রায় ৫৫০ ফুট বোরিং করার পর বালু ও পানির স্তর পাওয়া যায়। এরপর ফিল্টার পাইপ লাগানোর জন্য পাইপ ওপরের দিকে তোলার সময় হঠাৎ করে বিকট শব্দে গ্যাস উঠতে থাকে। এ সময় বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বালু ও পানি উঠতে থাকে।
আল মামুন ভূঁইয়া আরো জানান, খবর পেয়ে বাপেক্সের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। তারা জানিয়েছিল, ৭২ ঘণ্টা পর এটি এমনিতেই বন্ধ হয়ে যাবে।
এদিকে, এ ঘটনার পরই নিরাপত্তার কারণে ওই ওলাকায় চুলা জ্বালাতে নিষেধ করা হয়।
এমন পরিস্থিতির পর গতকাল রাত থেকে গ্যাস ও বালু ওঠা বন্ধ হওয়ায় স্বস্তি ফিরে আসে এলাকাবাসীর মনে।