তানোরে আটকে রেখে কিশোরীকে ধর্ষণ, ধর্মযাজক জেলে
রাজশাহীর তানোর উপজেলায় গির্জায় আটকে রেখে এক আদিবাসী কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে ধর্মযাজক প্রদীপ গ্রেগরিকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার মামলার পর রাত পৌনে ১২টার দিকে নগরীর বিশপ হাউজ থেকে র্যাব অভিযুক্ত ফাদারকে গ্রেপ্তার করে।
প্রদীপ গ্রেগরি নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার ভানীপুর গ্রামের মৃত প্যাট্রিক গ্রেগরির ছেলে। তিনি রাজশাহীর তানোর উপজেলার মুণ্ডুমালা মাহালীপাড়া এলাকার সাধুজন মেরী ভিয়ান্নী গির্জায় ধর্মযাজক হিসেবে কাজ করতেন।
র্যাব-৫-এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এ টি এম মাইনুল হোসেন জানান, ধর্মযাজক প্রদীপ গ্রেগগিকে (৪০) গ্রেপ্তারের পর তানোর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
রাজশাহী জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইফতেখায়ের আলম জানান, প্রদীপ গ্রেগরিকে আজ সকালে আদালতের মাধ্যমে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
ভিকটিম কিশোরীর পরিবারের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, গত শনিবার সকালে তানোরের ‘সাধুজন মেরি ভিয়ান্নি গির্জার’ পাশে ঘাস কাটতে গিয়ে নিখোঁজ হয় সপ্তম শ্রেণির এক আদিবাসী কিশোরী। অনেক খুঁজেও তাঁকে না পেয়ে পরের দিন তানোর থানায় জিডি করেন তার ভাই। গত সোমবার সকালে গির্জার ধর্মযাজক প্রদীপ গ্রেগরির কক্ষে পাওয়া যায় নিখোঁজ কিশোরীকে।
বিষয়টি জানাজানি হলে ঘটনা ধামাচাপা দিতে ওই দিন দুপুরে রাজশাহী ধর্ম প্রদেশের তিনজন প্রতিনিধি স্থানীয় গ্রামপ্রধান মাইকেল হেমরন ও মহেষ মুরমু এবং আদিবাসী নেতা কামেল মার্ডিকে নিয়ে শালিস বৈঠক বসান। বৈঠকে কিশোরীর ভরণ পোষণের যাবতীয় খরচ বহন করা হবে বলে সবাই ফাদারের পক্ষে রায় দেন। তবে দোষী প্রমাণিত হওয়ায় প্রদীপ গ্রেগরিকে গির্জা থেকে অপসারণ করে রাজশাহী ধর্ম প্রদেশে নেওয়া হয়।
সালিস বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ভুক্তভোগী কিশোরীকে গির্জার ভেতরে সিস্টারদের কাছে রাখতে বলা হয়। ওই কিশোরীর পরিবারের সদস্যরা থানা থেকে নিখোঁজের জিডি প্রত্যাহার করে নিলে তাঁকে পরিবারের কাছে পাঠানো হবে। এ ছাড়া বিয়ের আগ পর্যন্ত ওই কিশোরীর যাবতীয় খরচ বহন করবে গির্জা কর্তৃপক্ষ।
গতকাল মঙ্গলবার কিশোরীর ভাই থানায় গিয়ে বিষয়টি জানালে সন্ধ্যায় তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুশান্ত কুমার মাহাতো ও ওসি রাকিবুল হাসান গির্জা থেকে কিশোরীকে উদ্ধার করেন।
তানোর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাকিবুল হাসান বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ওই কিশোরীকে উদ্ধার করে গতকাল মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে থানায় আনা হয়। শারীরিক পরীক্ষার জন্য তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে পাঠানো হয়েছে।