জাহালমকে ১৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশ
ব্যাংকের প্রায় সাড়ে ১৮ কোটি টাকা জালিয়াতির মামলায় ঠাকুরগাঁওয়ের সালেকের বদলে টাঙ্গাইলের জাহালমকে আটকের ঘটনায় ১৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ টাকা আগামী এক মাসের মধ্যে ব্র্যাক ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে দিতে বলা হয়েছে।
আজ বুধবার বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। এদিন আদালতে দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশিদ আলম খান এবং ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেডের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. আসাদুজ্জামান ও সোনালী ব্যাংকের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার শেখ মো. জাকির হোসেন।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, ব্যাংকের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০১২ সালের ১০ এপ্রিল ধানমণ্ডি থানায় মামলা করে দুদক। ওই মামলায় ২০১৫ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি অভিযোগপত্র দেয় দুদক। পরে অধিকতর তদন্ত করে ২০১৯ সালের ১৪ জানুয়ারি সম্পূরক অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। তদন্তকালে গ্রেপ্তার মানিকগঞ্জের টেটামার বড়াইদিয়ারা গ্রামের আব্বাস আলীর ছেলে নজরুল ইসলাম ওরফে সফদার হোসেন ওরফে সাগর আহম্মদ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তাঁর জবানবন্দিতে ১০টি ব্যাংক থেকে ২০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করার বর্ণনা দেওয়া হয়।
এরই সূত্র ধরে মানিকগঞ্জের উত্তরকৃষ্ণপুর গ্রামের মৃত শামসুল হক বাচ্চুর ছেলে আমিনুল হক সরদারকে আসামি করে দুদক অভিযোগপত্র দেয়। ওই টাকা আত্মসাতের অভিযোগে আসামিদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়েছে। এরপর গত বছর পহেলা এপ্রিল ঢাকার আদালতে আত্মসমর্পণ করেন আমিনুল। সেই থেকে তিনি কারাবন্দি। এ অবস্থায় ধানমণ্ডি ও রামপুরা থানার মামলায় ঢাকার বিশেষ জজ আদালতে জামিনের আবেদন করলে আদালত তা খারিজ করে গত ২০ জানুয়ারি ও ১০ ফেব্রুয়ারি আদেশ দেন। এরপর হাইকোর্টে আবেদন করেন আমিনুল। তাঁর আবেদনে বলা হয়, তাঁর বিরুদ্ধে ৩০টি মামলা হয়েছে। এরমধ্যে ১৪টি মামলায় জামিনে রয়েছেন।
‘৩৩ মামলায় ভুল আসামি জেলে’ শিরোনামে একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে নিরাপরাধ জাহালমকে ফাঁসিয়ে দেওয়ার অভিযোগ তুলে ধরা হয়। এই প্রতিবেদন হাইকোর্টের নজরে আনার পর আদালত গতবছর ৩ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট টাঙ্গাইলের পাটকল শ্রমিক জাহালমকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেন এবং তাঁকে কারামুক্তির নির্দেশ দেন। সেদিন রাতেই জাহালমকে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়।