জামালপুরে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, পানিবন্দি দেড় লাখ মানুষ
জামালপুরের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতির দিকে যাচ্ছে। টানা বর্ষণ আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে যমুনা-ব্রহ্মপুত্রসহ শাখা নদীগুলোর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি হয়েছে। আজ সোমবার বিকেলে বাহাদুরাবাদঘাট পয়েন্টে যমুনার পানি বেড়ে বিপৎসীমার ৮৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে জেলার ছয় উপজেলার প্রায় দেড় লাখ মানুষ। অপরদিকে, বন্যার পানিতে ডুবে মৃত্যু হয়েছে দুই শিশুর।
যমুনা, ব্রহ্মপুত্রসহ শাখা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় নতুন করে প্লাবিত হয়েছে মেলান্দহ উপজেলার মাহমুদপুর, দুরমুঠ, নাংলা, কুলিয়া, ফুলকোচা, ঝাউগড়া এবং মাদারগঞ্জ উপজেলার বালিজুড়ী, জোড়খালি, চরপাকেরদহ ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকা। সবমিলিয়ে ইসলামপুর, মাদারগঞ্জ, দেওয়ানগঞ্জ, বকশীগঞ্জ, মেলান্দহ ও সরিষাবাড়ী উপজেলার ২৭টি ইউনিয়নের ১১৬টি গ্রামের প্রায় দেড় লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পানি উঠে পড়ায় বসতবাড়ি ছেড়ে দুর্গতরা আশ্রয় নিয়েছে বিভিন্ন উঁচু সড়ক ও আশ্রয়কেন্দ্রে। এরই মধ্যে বন্যার পানি উঠে ইসলামপুর-উলিয়া-মাহমুদপুর সড়ক ও ইসলামপুর-গুঠাইল সড়কসহ বেশকিছু আঞ্চলিক ও স্থানীয় সড়কে যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে গেছে। বন্যার পানিতে ডুবে গেছে পাঁচ হাজার ৫৯৩ হেক্টর পাটসহ ছয় হাজার ৯০৭ হেক্টর জমির ফসল।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. নায়েব আলী জানান, দুর্গত এলাকার জন্য এখন পর্যন্ত ৬০ মেট্রিকটন চাল ও নগদ পাঁচ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
অপরদিকে, আজ সকালে মেলান্দহের দুরমুঠ ইউনিয়নের রুকনাই গ্রামের রেহান আলীর ছেলে মো. সনি (১২) বন্যার পানিতে ডুবে যাওয়া রাস্তা পার হতে গিয়ে স্রোতের তোড়ে ভেসে যায়। বিকেলে ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা সনির লাশ উদ্ধার করে। এ ছাড়াও, গতকাল রোববার সন্ধ্যায় মাদারগঞ্জের বালিজুড়ী ইউনিয়নের মির্জাপুর গ্রামের বেলালের ছেলে সোহান (৭) বন্যার পানিতে ডুবে যায়। পরে রোববার রাতে স্থানীয়রা সোহানের লাশ উদ্ধার করে।