জাপায় দেবর-ভাবির নেতা নিয়োগের ‘প্রতিযোগিতা’
ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে জমে উঠেছে সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদের রেখে যাওয়া জাতীয় পার্টিতে (জাপা) নেতা নিয়োগের ‘প্রতিযোগিতা’।
এর মধ্য দিয়ে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদের ছোটভাই গোলাম মোহাম্মদ (জি এম) কাদের এবং পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক এরশাদপত্মী রওশন এরশাদের মধ্যে ধারাবাহিক ক্ষমতার লড়াই আবারও প্রকাশ্যে চলে এসেছে।
জি এম কাদেরের ক্ষমতা প্রয়োগ
আজ বুধবার সকাল থেকেই নিয়োগ ও পাল্টা নিয়োগ চলছে দলটিতে। সকালে নিজের উপদেষ্টা হিসেবে স্ত্রী শেরিফা কাদেরকে নিয়োগ দেন দলটির চেয়ারম্যান জি এম কাদের। একইসঙ্গে উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন নিজের বোন মিসেস মেরিনা রহমান ও ভাগ্নি ড. মেহজেবুন্নিসা রহমানকেও।
দলের গঠনতন্ত্রে চেয়ারম্যানকে দেওয়া ক্ষমতাবলে মোট নয়জনকে উপদেষ্টা পদে নিয়োগ দেন জি এম কাদের। তাঁরা হলেন- শেরিফা কাদের (ঢাকা), সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী (চট্টগ্রাম), কারি হাবিবুল্লাহ বেলালী, মিসেস মেরিনা রহমান, ড. মো. নুরুল আজহার শামীম (ঢাকা), মো. হাসিবুল ইসলাম জয় (রংপুর), মনিরুল ইসলাম মিলন, ড. মেহজেবুন্নিসা রহমান ও আব্দুল্লাহ সিদ্দিকী।
রওশন এরশাদের ক্ষমতা প্রয়োগ
জাপার চেয়ারম্যানের ক্ষমতা প্রয়োগের কয়েক ঘণ্টা পরই দলটির প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা, এরশাদপত্মী রওশন এরশাদ নিয়োগ দিলেন নিজের ছেলে সাদ এরশাদসহ ১৭ জনকে।
রওশন এরশাদ স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সম্মেলনে অর্পিত দায়িত্ব ও প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সংগঠনের কার্যক্রম গতিশীল করার স্বার্থে এই পদায়ন করা হলো।
সংসদ সদস্য রাহগির আল মাহি সাদ এরশাদ ও এম এ ছাত্তারকে কো-চেয়ারম্যান করেন রওশন এরশাদ। এ ছাড়া নিজের পছন্দের ১১ জনকে প্রেসিডিয়াম সদস্য করেন। নতুন প্রেসিডিয়াম সদস্যরা হলেন দেলোয়ার হোসেন খান, খালেদ আখতার, ইকবাল হোসেন (রাজু), নূরে হাসনা লিলি চৌধুরী, রওশন আরা মান্নান, ফকরুজ্জামান জাহাঙ্গীর, কাজী মামুন, মাহজাবিন মুর্শেদ, নুরুল ইসলাম (নুরু), নুরুল ইসলাম (ওমর) ও আরিফুর রহমান খান।
এ ছাড়া রওশন এরশাদ নিজের ক্ষমতাবলে আমানত হোসেন ও মো. ইয়াহিয়াকে ভাইস চেয়ারম্যান এবং জসিম উদ্দিন ভূঁইয়া ও মো. রেজাউল করিমকে যুগ্ম মহাসচিব পদে মনোনয়ন দেন।
এ সিদ্ধান্ত অনতিবিলম্বে কার্যকর হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।
রওশনের ক্ষমতা মানতে নারাজ কাদের
এরপর আজ সন্ধ্যায় একটি বিবৃতি পাঠিয়ে রওশন এরশাদের সিদ্ধান্তকে এখতিয়ারবহির্ভূত ও বিভ্রান্তিকর বলে উল্লেখ করেছেন পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের।
এতে বলা হয়েছে, ‘এভাবে কোনো নিয়োগ দেওয়ার এখতিয়ার প্রধান পৃষ্ঠপোষকের নেই। জাতীয় পার্টির নবম কাউন্সিলের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত মোতাবেক পার্টির বিভিন্ন পদে নিয়োগ প্রদানের ক্ষমতা একমাত্র পার্টি চেয়ারম্যানের, অন্য কারো নেই।’
বিবৃতিতে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মী এবং জনসাধারণকে বিভ্রান্ত না হতে অনুরোধ জানানো হয়।