চাচাতো ভাইয়ের সঙ্গে স্ত্রীর পরকীয়ায় খুন হন রেলকর্মচারী
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে স্ত্রীর পরকীয়ার জেরে খুন হয়েছেন রেলওয়ে কর্মচারী মাহবুব রহমান। রোববার সন্ধ্যায় কিশোরগঞ্জের জুডিশিয়াল আদালতে এ ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন গ্রেপ্তারকৃত মাহবুবের স্ত্রী রোকসানা আক্তার (৩০) ও চাচাতো ভাই হাসিব মিয়া (২২)।
গত বৃহস্পতিবার সকালে ভৈরব শহরের চন্ডিবের নিজ ঘর থেকে মাহবুবের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত মাহবুব বাংলাদেশ রেলওয়ের ঢাকা বিভাগীয় যান্ত্রিক প্রকৌশল বিভাগের এসএস ফিটার পদে কর্মরত ছিলেন। তিনি শহরের চণ্ডিবের কামাল সরকার বাড়ির বাসিন্দা।
গত শুক্রবার সকালে মাহবুবের বড় ভাই সাংবাদিক হাবিবুর রহমান অজ্ঞাতপরিচয় তিন থেকে চারজনকে আসামি করে একটি মামলা করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও ভৈরব থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. বাহালুল খান বাহার জানান, ঘটনার দিন মাহবুবের স্ত্রী পুলিশকে জানিয়েছিলেন, ডাকাতরা মাহবুবকে হত্যা করে টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায় এবং তাঁকে ছুরিকাঘাতে আহত করে। কিন্তু তাঁর কথাবর্তায় পুলিশের সন্দেহ হয়। গত শনিবার সকালে পুলিশ মাহবুবের চাচাতো ভাই হাসিব মিয়াকে নিজ বাড়ি থেকে আটক করে। এরপর জিজ্ঞাসাবাদে হাসিব খুনের পুরো ঘটনা খুলে বলেন।
তদন্ত কর্মকর্তা আরো জানান, পরে হাসিবের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী বাড়ির পাশের একটি কচুক্ষেত থেকে হাসিবের রক্তমাখা জামা-কাপড় উদ্ধার করা হয়। পরে বাজিতপুরের জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নিহত মাহবুবের স্ত্রী রোকসানাকেও গ্রেপ্তার দেখানো হয়। হাসিবের পর রোকসানাও পুলিশের কাছে হত্যার দায় স্বীকার করেন।
বাহালুল আলম খান বাহার জানান, শুরু থেকেই নিহতের স্ত্রী রোকসানাকে সন্দেহের তালিকায় রাখা হয়েছিল। তাদের মুঠোফোনের সূত্র ধরে হাসিবকে শনাক্ত করা হয়। হাসিব রোকসানার সঙ্গে প্রেমের কথা স্বীকার করেন। তারা মনে করেছিলেন মাহবুবকে সরিয়ে দিতে পারলে তাদের পথের কাঁটা দূর হয়ে যাবে। এরপরই তাঁকে হত্যার পরিকল্পনা করেন দুজনে।
ওই কর্মকর্তা জানান, রোখসানা তাদের কাছে স্বীকার করেছেন যে, পায়েসের সঙ্গে ঘুমের ট্যাবলেট মিশিয়ে মাহবুবকে খাওয়ানো হয়। এতে মাহবুব অচেতন হয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। রাত ৩টার দিকে তিনি দরজা খুলে দিলে হাসিব ঘরে ঢোকেন। পরে মাহবুবকে হত্যা করা হয়।
প্রায় ১২ বছর আগে নরসিংদীর বেলাবো উপজেলার ইব্রাহিমপুর গ্রামের সহিদ মিয়ার মেয়ে রোকসানার সঙ্গে মাহবুবের বিয়ে হয়। মাহবুব-রোকসানার সংসারে দুই ছেলে ও এক মেয়ে সন্তান রয়েছে।