চাকরি দেওয়ার নামে কোটি টাকার প্রতারণা, গ্রেপ্তার ৪
রাজধানীর মিরপুরসহ মতিঝিল এলাকায় চাকরি দেওয়ার নাম করে প্রতারণা, অর্থ আত্মসাৎ ও জালিয়াতচক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। গতকাল মঙ্গলবার র্যাব-৩-এর একটি দল রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে।
আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর টিকাটুলী র্যাব-৩ সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাব-৩-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন—মো. হেলাল উদ্দিন (৫১), মো. মফিজুল ইসলাম ওরফে লেবু (৪৭), মো. খন্দকার মারুফ (৩৭) ও মো. আব্দুল কাদের ওরফে রাজু (২৯)। তাঁদের কাছ থেকে বিভিন্ন সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ ২৪টি সিলমোহর, ১১ পাতা ভুয়া নিয়োগপত্র, তিন পাতা নিয়োগসংক্রান্ত চুক্তিপত্র, ৮টি মোবাইল ফোন এবং নগদ ২১ হাজার ৫০০ টাকা জব্দ করা হয়।
আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরি দেওয়ার মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের অসহায় ও দুস্থ মানুষদের হয়রানি ও কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে আসছিল চক্রটি। পাঁচ বছর ধরে এই চক্রটি ৫০ জন চাকরিপ্রার্থী ও অভিভাবকদের কাছ থেকে এভাবে প্রতারণা করে প্রায় দুই কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।’
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গ্রেপ্তার মো. হেলাল উদ্দিন প্রতারণা ও জালিয়াতচক্রের মূল হোতা। তিনি বিভিন্ন লোকের কাছে মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, কোথাও থানার এসআই হিসেবে নিজের পরিচয় দিয়ে আসছেন। তিনি ভুক্তভোগীদেরকে কথার জালে ফাঁসিয়ে, চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিতেন। জালিয়াত চক্রের প্রধান হিসেবে তিনি বিভিন্ন লোকের কাছ প্রায় দুই কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। যা পরে প্রতারকচক্রের অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নিতেন।
আরিফ মহিউদ্দিন জানান, গ্রেপ্তার মো. মফিজুল ইসলাম লেবু এবং মো. আব্দুল কাদের রাজু দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে চাকরিপ্রার্থী এবং তাদের অভিভাবকদের হেলাল উদ্দিনের কাছে নিয়ে আসতেন। হেলাল উদ্দিন বস সেজে ভুক্তভোগীদের ইন্টারভিউ নিতেন। পরে উবারের একটি গাড়ি ভাড়া করে, যা নিজের গাড়ি বলে দাবি করে সরকারি বিভিন্ন অফিসে সামনে নিয়ে গাড়ি থেকে নেমে অফিসের ভেতরে প্রবেশ ও বের হতেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, গ্রেপ্তার মো. হেলাল উদ্দিন কৌশলে চাকরিপ্রার্থী ও তাঁদের অভিভাবকদের আস্থা অর্জন করতেন। এরপর বিভিন্ন সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ সিলমোহর ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার ভুয়া স্বাক্ষর সংবলিত বিভিন্ন অফিস আদেশ এবং ভুয়া নিয়োগপত্র খামে বন্দি করে ভুক্তভোগীদের হাতে ধরিয়ে দিতেন।