চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচনি এলাকায় চরম সহিংস পরিস্থিতি বিরাজের অভিযোগ তুলেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সকাল থেকে সহিংসতা শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে নির্বাচনি সহিংসতায় দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এতে এখন পর্যন্ত প্রায় অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছে। ভোটাররা যাতে ভোটকেন্দ্রে যেতে না পারে, তাদের বাধা দেওয়া হচ্ছে। পুলিশের কাছে অভিযোগ দিলে বলছে, তারা কিছু করতে পারবে না।’

আজ বুধবার প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) কাছে নির্বাচন সংক্রান্ত অভিযোগ দেওয়ার পর রিজভী সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। চসিক নির্বাচনের প্রথম তিন ঘণ্টার ঘটনাবলির সংক্ষিপ্ত চিত্র সিইসিকে দিয়েছে বিএনপি।

নির্বাচনকে চূড়ান্ত পর্যায়ের তামাশা ও প্রহসনের নির্বাচন আখ্যা দিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, বর্তমান সরকার যত দিন ক্ষমতায় থাকবে, তত দিন সুষ্ঠু নির্বাচন নামক শব্দটি মানুষের কাছে অচেনা হয়ে যাবে। এরা ভোটারদের ভোটাধিকার মনেপ্রাণে ঘৃণা করে। এরা বিরোধী দল, ভিন্ন মত, সমালোচনার ভয়ঙ্কর শত্রু। তাদের আমলে শঙ্কা ও ভয় জনগণকে ঘিরে থাকে। মূলত এ দেশের জনগণ অনতিক্রম্য বন্দিশালায় বন্দি। জালিমশাহীর রাজত্ব, নমরুদ-ফেরাউনের আমলকেও হার মানিয়েছে।

অভিযোগ করে রিজভী আরো বলেন, চট্টগ্রাম সিটির নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকেই সেই ট্র্যাডিশন সমানে চলছে। আওয়ামী সরকারের যে বৈশিষ্ট্য নির্বাচনকে ঘিরে, সেই নির্বাচন হবে কেড়ে নেওয়ার নির্বাচন। ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে না আসতে দেওয়ার নির্বাচন, বিএনপির প্রার্থী ও তাদের এজেন্টদের বের করে দেওয়া বা গ্রেপ্তার করা— ঠিক একইভাবে এখনো চলছে। আজ সকাল ৮টায় যে নির্বাচন শুরু হয়েছে, দুই থেকে তিন ঘণ্টার মধ্যে ধানের শীষের এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে।

চট্টগ্রামে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও নির্বাচনি কার্যালয়ের যৌথ প্রযোজনায় আরেকটি জালিয়াতির নির্বাচন চলছে বলেও মন্তব্য করেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব।

পুলিশের দিকে অভিযোগ তুলে রিজভী বলেন, চসিক নির্বাচনকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রামে পুলিশি তাণ্ডব চলছে। সেখানে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা গতকালই পুলিশ কমিশনারসহ বিভাগীয় পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে মিটিং করে নির্দেশনা দিয়েছেন যে, কীভাবে বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে পাইকারিহারে মামলা ও গ্রেপ্তার, এজেন্টদের গ্রেপ্তার ও বিএনপি নেতাকর্মীদের এলাকাশূন্য করে ভোট ডাকাতি করা যায়। আজ সকাল থেকে পরিকল্পনা অনুযায়ী, সেই কাজটি তাঁরা করেছেন। তিনি বলেন, ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে না আসার জন্য যত ধরনের মেকানিজম আছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও নির্বাচনি কর্মকর্তারা একসঙ্গে মিলে সেই কাজটি করেছেন। কর্মকর্তারা প্রশাসনের বিভিন্ন জায়গায় আওয়ামী লীগের দলীয় ক্যাডারদের মতো কাজ করছেন। ভোট ডাকাতিতে প্রশাসন যন্ত্র ও রাষ্ট্রযন্ত্র মিলে একাকার হয়ে গেছে। যদিও নির্বাচনি তফসিল ঘোষণার পর থেকে আজ পর্যন্ত দেড়শতাধিক কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সহস্রাধিক নেতাকর্মীকে মামলা দিয়ে এলাকা ছাড়া করা হয়েছে।