গাড়িচালক মালেক ও তার স্ত্রীর অভিযোগপত্র দুদকে অনুমোদন
সাড়ে তিন কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আলোচিত গাড়িচালক আবদুল মালেক ও তার স্ত্রী নার্গিস বেগমের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ মঙ্গলবার সংস্থাটির প্রধান কার্যালয়ে কমিশন থেকে ওই অভিযোগপত্র অনুমোদন দেওয়া হয়।
দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) মুহাম্মদ আরিফ সাদেক এনটিভি অনলাইনকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, দুদকের তদন্ত কর্মকর্তা ও সহকারী পরিচালক সৈয়দ নজরুল ইসলাম শিগগিরই আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করবেন। মালেক দম্পতির বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে চলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি পৃথক দুটি মামলা দায়ের করে দুদক।
তদন্ত প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, অনুমোদিত অভিযোগপত্রে মালেকের বিরুদ্ধে ৯৩ লাখ ৫৩ হাজার ৬৪৮ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন এবং এক কোটি ৫০ লাখ ৩১ হাজার ৮১০ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনসহ মোট দুই কোটি ৪৩ লাখ ৮৫ হাজার ৫৫৮ টাকার সম্পদ পাওয়ার তথ্য উল্লেখ করা হয়।
অপর মামলায় আবদুল মালেক ও তার স্ত্রী নার্গিস বেগমকে আসামি করা হয়। এ মামলায় নার্গিস বেগমের দুই কোটি ১২ লাখ ৩৫ হাজার ৪৩১ টাকার সম্পদের তথ্য উল্লেখ করা হয়, যার বিপরীতে বৈধ উৎস পাওয়া যায় এক কোটি এক লাখ ৪৩ হাজার ৩৮২ টাকা। অবশিষ্ট এক কোটি ১০ লাখ ৯২ হাজার ৫০০ টাকার সম্পদ অবৈধ উপায়ে অর্জিত। তার বিরুদ্ধে দুদক আইন ২০০৪ এর ২৭ (১) ও ২৬ (২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, গাড়িচালক আবদুল মালেক স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মচারী ইউনিয়নের স্বঘোষিত সভাপতি হয়ে ২০১০ সালে ৫০০ কর্মচারী নিয়োগ-বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেন। এ টাকা দিয়েই সম্পদের পাহাড় গড়েন তিনি। উত্তরার কামারপাড়ায় দুটি সাততলা বাড়িসহ নামে-বেনামে অঢেল সম্পদ গড়েছেন মালেক ও তার স্ত্রী, এমন অভিযোগের ভিত্তিতে অনুসন্ধানে নামে দুদক।
অনুসন্ধান চলাকালে অবৈধ অস্ত্র, জাল নোটের ব্যবসা ও চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গত বছরের ২০ সেপ্টেম্বর রাজধানীর তুরাগ এলাকা থেকে গাড়িচালক আবদুল মালেককে আটক করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। গতকাল সোমবার মালেকের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে দায়ের করা মামলায় পৃথক ধারায় মালেককে ১৫ বছর করে মোট ৩০ বছরের সাজা দেন আদালত। দুটি সাজাই একসঙ্গে চলবে, সে হিসেবে আবদুল মালেককে মূলত ১৫ বছর সাজা ভোগ করতে হবে।
গাড়িচালক আবদুল মালেক তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী। অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত তিনি পড়াশোনা করেন। ১৯৮২ সালে প্রথম সাভারে একটি প্রকল্পের গাড়িচালক হিসেবে যোগ দেন তিনি। প্রায় চার বছর চাকরির পর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিবহন পুলে যোগ দেন। আটকের আগ পর্যন্ত প্রেষণে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফপ্তরের পরিবহন পুলের গাড়িচালক ছিলেন তিনি। ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মচারী ইউনিয়নের স্বঘোষিত সভাপতিও।