গাড়িচালক মালেকের ‘দুর্নীতির’ দায় ব্যক্তিগত : অধিদপ্তর
আলোচিত গাড়িচালক আবদুল মালেকের দুর্নীতি ও অনিয়মের সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালকের কোনো প্রকার সংশ্লিষ্টতা নেই বলে দাবি করেছে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর।
মালেকের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের দায় তার ব্যক্তিগত- উল্লেখ করে আজ বুধবার স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মোস্তফা খালেদ আহমদ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়েছে, ‘২০১৯ সালের ২৪ নভেম্বর স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর গঠিত হয়। ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর এ প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক হিসেবে যোগদান করেন অধ্যাপক ডা. এ এইচ এম এনায়েত হোসেন। ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে প্রেষণে এ অধিদপ্তরে গাড়িচালক আবদুল মালেককে ন্যস্ত করা হয়।’
‘প্রতিষ্ঠার পর থেকে আজ পর্যন্ত এ অধিদপ্তরে কোনো কেনাকাটা, কর্মচারী নিয়োগ, পদায়ন বা পদোন্নতি হয়নি। কাজেই গাড়িচালক আবদুল মালেকের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের সঙ্গে মহাপরিচালকের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই’, যোগ করা হয় বিজ্ঞপ্তিতে।
গত শনিবার দিবাগত রাত ৩টায় রাজধানীর তুরাগ থানার কামারপাড়া এলাকা থেকে আবদুল মালেককে গ্রেপ্তার করা হয়। এর পরই তাঁকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়।
এরপর র্যাবের পক্ষ থেকে দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আবদুল মালেক পেশায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিবহন পুলের একজন গাড়িচালক এবং একজন তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী। বর্তমানে তিনি প্রেষণে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরে কর্মরত আছেন।
আবদুল মালেকের স্ত্রীর নামে কামারপাড়ায় দুটি সাততলা বিলাসবহুল ভবন আছে, ধানমণ্ডির হাতিরপুল এলাকায় সাড়ে চার কাঠা জমিতে একটি নির্মাণাধীন ১০তলা ভবন আছে। এ ছাড়া দক্ষিণ কামারপাড়ায় ১৫ কাঠা জমিতে একটি ডেইরি ফার্ম আছে। বিভিন্ন ব্যাংকে নামে-বেনামে তাঁর বিপুল অর্থ গচ্ছিত আছে।
র্যাব আরো দাবি করে, আবদুল মালেকের ১০০ কোটি টাকারও বেশি সম্পদ আছে। তাঁর নামে জাল টাকার ব্যবসা, চাঁদাবাজি ও অস্ত্র ব্যবসার অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া আবদুল মালেক স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বদলি বাণিজ্য এবং বিভিন্ন দপ্তরে তদবির করার নাম করে তাঁর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আনুকুল্য নিয়ে এত টাকার মালিক হয়েছেন।
র্যাব আরো জানায়, মালেক নিজে গাড়িচালক হলেও স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ এইচ এম এনায়েত হোসেনের জন্য বরাদ্দ একটা সাদা পাজেরো জিপ গাড়ি নিয়মিত ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করে থাকেন। মহাপরিচালকের জন্য বরাদ্দকৃত পাজেরো গাড়ি ছাড়াও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আরো দুটি গাড়ি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করতেন।
এর মধ্যে একটি পিকআপ গাড়ি মালেক নিজের গরুর খামারের দুধ বিক্রি এবং মেয়ের জামাইয়ের পরিচালিত ক্যান্টিনের মালামাল পরিবহনের কাজে ব্যবহার করতেন। অপর একটি মাইক্রোবাস স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে কর্মরত তাঁর পরিবারের অন্য সদস্যরা ব্যবহার করতেন।