গাজীপুরে প্রবাসীর স্ত্রীকে খুন : দুই বছর পর চাচা-ভাতিজা গ্রেপ্তার
গাজীপুরে ঋণের টাকা ফেরত চাওয়ায় এক প্রবাসীর স্ত্রীকে হত্যা করে লাশ গজারি বনে পুঁতে রাখে হত্যাকারীরা। চাঞ্চল্যকর এ খুনের ঘটনায় জড়িত থাকায় প্রতিবেশী চাচা ও ভাতিজাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। প্রায় দুই বছর পর ক্লুলেস এ খুনের রহস্য উন্মোচন করেছে পিবিআই।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে গাজীপুর পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেপ্তাকৃতরা হলেন গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সদর থানাধীন পোড়াবাড়ি পূর্ব কোনাপাড়া এলাকার মো. মোকসেদ আলী (৪২) এবং তাঁর ভাতিজা জাহাঙ্গীর হোসেন (৩৮)।
মামলার সূত্রে পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান জানান, ২০১৮ সালের ১৩ ডিসেম্বর জিএমপি সদর থানাধীন পোড়াবাড়ী পূর্ব কোনাপাড়া এলাকার গজারি বনের পুকুরপাড়ে মাটিচাপা দেওয়া এক নারীর (৩২) অর্ধগলিত বিবস্ত্র লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় থানায় মামলা করা হয়। পরে নিহতের পরিচয় শনাক্ত হয়। ওই নারীর নাম শিখা আক্তার। স্বামী প্রবাসে কর্মরত থাকায় নিঃসন্তান শিখা আক্তার তাঁর বাবার বাড়িতে বসবাস করতেন। আলোচিত ও চাঞ্চল্যকর এই ক্লুলেস হত্যা মামলার তদন্তভার পায় গাজীপুর জেলা পিবিআই। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এ ঘটনায় জড়িত মোকসেদ আলীকে গতকাল সোমবার স্থানীয় টেকনগপাড়া এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ভাতিজা জাহাঙ্গীরকে গ্রেপ্তার করে। গর্ত করে লাশ মাটিচাপা দেওয়ার কাজে ব্যবহৃত কোদাল জব্দ করেন পিবিআইয়ের তদন্ত কর্মকর্তা।
গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতে হাজির করা হলে তাঁরা আদালতে চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ঘটনার প্রায় দুই বছর পর চাঞ্চল্যকর শিখা আক্তার খুনের রহস্য উন্মোচন হলো।
গ্রেপ্তারকৃতরা জিজ্ঞাসাবাদের সময় জানান, মোকসেদ আলীর কাছ থেকে প্রবাসীর স্ত্রী শিখা আক্তার প্রতিদিন দুধ কিনতেন। স্বামীর অনুপস্থিতিতে শিখা আক্তারের বাসায় আসা যাওয়ার কারণে তাঁর সঙ্গে মোকসেদ আলীর ব্যক্তিগত সম্পর্ক গড়ে উঠে। এ সুযোগে গরু কেনার কথা বলে মোকসেদ আলী দেড় লাখ টাকা ধার নেন। পরে ওই টাকা ফেরত চাইলে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য সৃষ্টি হয়। এর জের ধরে শিখা আক্তারকে কৌশলে বাড়ির পাশের গজারি বনের ভেতরে ডেকে নিয়ে যান মোকসেদ আলী। সেখানে মোকসেদ ও তাঁর সহযোগীরা শিখা আক্তারের গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। পরে নিহতের লাশ বিবস্ত্র করে পুকুরপাড়ে গর্ত করে মাটিচাপা দিয়ে পালিয়ে যান তাঁরা। এ ঘটনার প্রায় ১২ থেকে ১৩ দিন পর নিহতের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।