গাজীপুরে আলিফ হত্যার ‘মূলহোতা বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত
গাজীপুরে থাপ্পড়ের প্রতিশোধ নিতে বাড়ির মালিকের শিশু সন্তান আলিফকে অপহরণ ও হত্যার ঘটনার মূলহোতা র্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে। এ সময় র্যাবের দুজন সদস্য আহত হয়েছে। র্যাব সদস্যরা ঘটনাস্থল থেকে একটি বিদেশি পিস্তল ও পাঁচটি গুলি উদ্ধার করার দাবি করেছে।
নিহতের নাম জুয়েল আহমেদ ওরফে সবুজ (২২)। তিনি নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার পদিপাড়া এলাকার রফিক উল্লাহর ছেলে।
র্যাব-১-এর স্পেশালাইজ কোম্পানি পোড়াবাড়ী ক্যাম্পের কোম্পানি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল-মামুন জানান, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কোনাবাড়ীর কাশিমপুর জেলখানা রোডে ড্যানো কারখানার সামনে গতকাল রোববার দিবাগত রাত ২টার দিকে এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে।
র্যাব-১-এর ওই কোম্পানি কমান্ডার জানান, গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ী হরিণাচালা পারিজাত এলাকার মো. ফরহাদ হোসেনের বাড়ির তৃতীয় তলার ফ্লাটের বাসায় ভাড়া থাকতেন জুয়েল ও সাগরসহ তিন বন্ধু। তারা ওই বাসায় থেকে স্থানীয় গার্মেন্টসে চাকরি করতেন। ভবনের ছাদে উঠে মেয়েদের উত্ত্যক্ত করার কারণে সপ্তাহ খানেক আগে জুয়েলকে কয়েকটি চড় মারেন ভবন মালিক ফরহাদ। এতে ক্ষুব্ধ হন জুয়েল ও সাগর। ওই থাপ্পড়ের প্রতিশোধ নিতে তারা ২৯ এপ্রিল বিকেলে বাড়ির মালিক ফরহাদ হোসেনের শিশু সন্তান আলিফ হোসেনকে (৫) কৌশলে বাড়ির ছাদে নিয়ে গলা টিপে হত্যা করে। এরপর লাশ প্লাস্টিকের বস্তায় ভরে বাড়ির তৃতীয় তলায় ঝুটের একটি গুদামে লুকিয়ে রাখে। পরদিন সকালে ভাড়াটিয়া জুয়েল ও সাগর বাড়ি থেকে পালিয়ে যান। পরে এ ঘটনাকে অপহরণের নাটক সাজিয়ে ওই দুই ভাড়াটিয়া বাড়ির মালিকের কাছে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।
এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ২ মে শনিবার রাতে পূবাইল এলাকা থেকে মো. সাগরকে (১৯) আটক করে র্যাব। তার তথ্যের ভিত্তিতে নিখোঁজের তিনদিন পর শনিবার রাতেই গুদামের ভেতর থেকে বস্তাবন্দি শিশু আলিফের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে র্যাব। আটক সাগর পাবনার সাথিয়া উপজেলার মিয়াপুর এলাকার বাসিন্দা।
র্যাবের ওই কর্মকর্তা আরো জানান, শিশু আলিফের হত্যাকারী সাগরের সহযোগিদের আটকের জন্য রোববার দিবাগত রাত ২টার দিকে কাশিমপুর জেলখানা রোডের ড্যানো কারখানার সামনে অভিযানে যায় র্যাব-১ এর একটি টিম। এ সময় র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে সন্ত্রাসীরা র্যাবকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে। আত্মরক্ষার্থে র্যাব সদস্যরাও পাল্টা গুলি ছুড়ে। দুই পক্ষের গুলি বিনিময়ের একপর্যায়ে সন্ত্রাসীরা পিছু হটে পালিয়ে যায়। পরে র্যাব সদস্যরা ঘটনাস্থলে তল্লাশি চালিয়ে শিশু আলিফ খুনের মূলহোতা জুয়েলকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। তাকে উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দীন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জুয়েলকে মৃত ঘোষণা করেন। এ সময় র্যাব সদস্যরা ঘটনাস্থল থেকে একটি বিদেশি পিস্তল ও পাঁচটি গুলি উদ্ধার করেছে। এ ঘটনায় র্যাবের দুই সদস্য নায়েক চান মিয়া ও কনস্টেবল ইদ্রিস আহত হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।