‘গলায় কার্ড ঝুলালে করোনা হবে না’ বলে প্রতারণা
ঢাকা জেলা প্রশাসন ও ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর অভিযান চালিয়ে বেশকিছু কার্ড উদ্ধার করেছে। বলা হচ্ছে, এই কার্ড গলায় ঝুলিয়ে রাখলে এক মাস করোনা হবে না। প্রশাসন বলছে, এটা প্রতারণা।
রাজধানীর চিকিৎসা সরঞ্জাম বিক্রির সর্ববৃহৎ পাইকারি বাজার বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) ভবনে জেলা প্রশাসন ও ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর যৌথভাবে গতকাল সোমবার দিনব্যাপী অভিযান পরিচালনা করে ‘ভাইরাস শাট আউট কার্ড’ উদ্ধার করে। এ সময় তিনটি প্রতিষ্ঠানকে এক লাখ ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
আজ মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানা যায়।
বিজ্ঞপ্তিতে ঢাকা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহনাজ হোসেন ফারিবা বলেন, ‘একটি কার্ড ঘাড়ে রাখলে এক মাস করোনামুক্ত থাকবে- এমন বিজ্ঞাপন দিয়ে ক্ষতিকর চিকিৎসা সামগ্রী বিক্রি করা হচ্ছিল। এটা এক ধরনের প্রতারণা।’
এ জন্য বায়োমেডিকস নামে প্রতিষ্ঠানকে ভাইরাস শাট আউট কার্ড ও নকল হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখায় ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, বায়োনিডস নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে ভাইরাস শাট আউট কার্ড রাখায় ৫০ হাজার টাকা জরিমানা এবং আজমেরি কমপ্লেক্সকে নকল ও অননুমোদিত কেএন৯৫ মাস্ক মজুদ ও বিক্রি করায় ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। পরে এসব নকল জিনিস ধ্বংস করা হয়। অভিযানকালে এসব কারণে সাতটি মামলা দেওয়ার নির্দেশ দেন আদালত।
ম্যাজিস্ট্রেট আরো বলেন, ‘প্রতিটি ভাইরাস শাট আউট কার্ড ২৫০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি করছিলেন তারা। অথচ এই কার্ড করোনা প্রতিরোধে সক্ষম নয় বরং মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর। এতে এক ধরনের কেমিক্যাল উপাদান ক্লোরাইন ডাই-অক্সাইড আছে।’ তিনি বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, কয়েকজন ব্যক্তি বিএমএ ভবনে এসে তাদের কার্ড সরবরাহ করতেন। কয়েক সপ্তাহ ধরে তারা দোকান থেকে বিক্রির পাশাপাশি ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করছিলেন। আমরা কিছু তথ্য পেয়েছি, কার্ড সরবরাহকারীদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
ম্যাজিস্ট্রেট ফারিবা আরো বলেন, ‘এটি আন্তর্জাতিক চক্রান্তের অংশ। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ এরইমধ্যে এর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। আমরা সত্যিই অবাক হয়েছি, বিএমএ ভবনে এই ধরনের ভুয়া কার্ড বিক্রি হচ্ছে দেখে। বিএমএ ভবন মালিক সমিতির নেতারা আশ্বাস দিয়েছেন, এ ঘটনায় তারা ব্যবস্থা নেবেন এবং এই কার্ড পরবর্তী সময়ে আর বিক্রি করতে দেওয়া হবে না।’
এদিক আজ মঙ্গলবার রাজধানীর উত্তরায় পৃথক অভিযানে ভাইরাস শাট আউট কার্ড জব্দ করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলাম।
গত ২০ এপ্রিল জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহনাজ হোসেন ফারিবা অভিযান চালিয়ে প্রথম ৫০ পিস ভাইরাস শাট আউট কার্ড জব্দ করেন।