‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ আজ, সারা দেশে বিএনপির বিক্ষোভ
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দুই বছরপূর্তি আজ। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর দেশে ওই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। দিনটি ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ আখ্যা দিয়ে একাদশ সংসদ নির্বাচন বাতিল ও পুনর্নির্বাচনের দাবিতে আজ বুধবার সারা দেশে বিক্ষোভ সমাবেশ করবে বিএনপি।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘বুধবার রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বেলা ১১টায় ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সমাবেশে বিএনপির জাতীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন। এ ছাড়া দেশব্যাপী জেলা ও মহানগরে বিক্ষোভ সমাবেশ কর্মসূচি পালিত হবে।’
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব আরো বলেন, ‘দেশের স্বাধীনতার পর থেকে আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় এসেছে, তখনই দেশে স্থিতিশীল গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে দেয়নি। প্রাণবন্ত গণতন্ত্রের জন্য যে দলীয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং উদার সাংস্কৃতিক দৃষ্টিভঙ্গি ও প্রবণতা অপরিহার্য, তা আওয়ামী লীগ কখনোই রপ্ত করেনি।’
রুহুল কবির রিজভী বলেন, “৩০ ডিসেম্বর বাংলাদেশের ইতিহাসে এক কলঙ্কিত অধ্যায়। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগের রাতে ‘ভোট ডাকাতি’ হয়েছে। তাই ৩০ ডিসেম্বর দিনটিকে দেশবাসী ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ হিসেবে পালন করে। পৃথিবীর ইতিহাসে অভাবনীয় রেকর্ড সৃষ্টিকারী রাতে ব্যালট বাক্স পূর্ণ করে ‘ক্ষমতা ‘দখলের’ দুই বছর পূর্ণ হবে মঙ্গলবার রাতে। তাই ওই রাতটি দেশবাসীর কাছে তাদের ভোটাধিকার হরণের কালো রাত হিসেবে কলঙ্কিত হয়ে থাকবে।’
রিজভী বলেন, “নির্বাচন কমিশন একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। অথচ প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) নুরুল হুদার নেতৃত্বে যে কমিশন, সে কমিশনের অধীনে আজ পর্যন্ত একটি নির্বাচনও সুষ্ঠু হয়নি। মানুষের ভোটের অধিকারকে এ কমিশন শুধু হরণই করেনি বরং মহান স্বাধীনতার মূল চেতনা গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে তারা গুরুতর অসদাচরণ করেছেন। নির্বাচন কমিশনের এ ভূমিকা জনগণের বিরুদ্ধে সরকারের নির্দয় মনোবৃত্তির সারাংশ মাত্র। দেশের ৪২ জন বিশিষ্ট নাগরিক ‘সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল’ গঠন করে ইসির ভোট ডাকাতি, অনিয়ম ও দুর্নীতির যে তদন্তের দাবি জানিয়েছেন এবং তাদের বিচার দাবি করেছেন- এ দাবি দেশের ১৬ কোটি মানুষের দাবি।”
এর আগে গত ২১ ডিসেম্বর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘বর্তমান ক্ষমতাসীনরা বাংলাদেশের গণতন্ত্র হত্যা করেছে। ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বর্ষপূর্তি। এজন্য ওই দিন গণতন্ত্র হত্যা দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘৩০ ডিসেম্বর বাংলাদেশের রাজনৈতিক জীবনে অত্যন্ত কলঙ্কিত। একাদশ জাতীয় নির্বাচনের বর্ষপূতি হবে। আসলে সেদিন নির্বাচনের নামে মানুষের ভোটাধিকার হরণ করা হয়েছে। সেজন্য দিনটিকে গণতন্ত্র হত্যা দিবস হিসেবে পালন করবে বিএনপি। দিনটি যথাযোগ্যভাবে গুরত্বসহকারে পালনের জন্য জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট, ২০ দলীয় জোট এবং বিএনপি কর্মসূচি গ্রহণ করবে।’