খুলনায় শিশু রাকিব হত্যা মামলার আসামি ওমর শরীফ ও তার চাচা মিন্টু খানকে হাইকোর্টের দেওয়া যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ বহাল রেখেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামির করা আপিল শুনানি শেষে আজ সোমবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ খারিজ করে দেন।

এই আদেশের ফলে আসামি ওমর শরীফ ও মিন্টুর যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ বহাল থাকল বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন  ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ।

২০১৫ সালের ৩ আগস্ট খুলনার টুটপাড়া কবরখানা মোড়ে শরীফ মোটরস নামের এক গ্যারেজে চাকায় হাওয়া দেওয়ার কমপ্রেসার মেশিনের মাধ্যমে মলদ্বারে হাওয়া ঢুকিয়ে শিশু রাকিবকে হত্যা করা হয়। ঘটনার পরের দিন রাকিবের বাবা মো. নুরুল আলম বাদী হয়ে শরীফ, তার চাচা মিন্টু খান ও শরীফের মা বিউটি বেগমের বিরুদ্ধে সদর থানায় হত্যা মামলা করেন।

সে মামলা হওয়ার ৯৬ দিন পর বিচারপ্রক্রিয়া শেষে একই বছরের ৮ নভেম্বর রায় দেন খুলনা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক দিলরুবা সুলতানা। রায়ে মামলার আসামি শরীফ মোটরসের মালিক ওমর শরীফ ও তার সহযোগী মিন্টুকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। অপর আসামি বিউটি বেগমকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়। এরপর রায়সহ মামলার নথি ওই বছরের ১০ নভেম্বর হাইকোর্টে আসে এবং ডেথ রেফারেন্স হিসেবে নথিভুক্ত হয়। সেই সঙ্গে দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আসামিরা আপিল ও জেল আপিল করেন।

এরপর প্রধান বিচারপতির নির্দেশে এই মামলার ডেথ রেফারেন্স শুনানি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পেপারবুক (মামলার বৃত্তান্ত) প্রস্তুত করা হয় এবং হাইকোর্ট বেঞ্চে মামলাটি শুনানির জন্য আসে।

এরপর বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের করা আপিলের শুনানি শেষে ২০১৭ সালের ৪ এপ্রিল রায় ঘোষণা করেন। 

হাইকোর্ট তার রায়ে রাকিব হত্যা মামলায় ওমর শরীফ ও মিন্টুকে বিচারিক আদালতের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডের সাজার পরিবর্তে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন। পরে হাইকোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেন আসামিরা।