খাদ্যে বিষক্রিয়ায় দুই বোন মারা গেছে, আইইডিসিআরের ধারণা
অজ্ঞাত ভাইরাসে নয়, খাদ্যে বিষক্রিয়ায় পাবনায় দুই বোনের মৃত্যু হয়েছে বলে ঘটনাস্থল পরির্দশন শেষে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিটিউটের (আইইডিসিআর) অনুসন্ধান দল ধারণা করছেন।
পাবনার ফরিদপুর উপজেলায় আকস্মিক অসুস্থতায় সাথী খাতুন (১৪) ও বিথী খাতুন (১০) নামে দুই বোনের মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে আজ সোমবার মাঠে নামে আইইডিসিআরের অনুসন্ধান দল। সংস্থার চার সদস্যের বিশেষজ্ঞ দল মাঠ পর্যায়ের তদন্ত শেষে তিনদিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেবেন।
অনুসন্ধান দলের সদস্যরা আজ সোমবার দুপুর ১২টায় ফরিদপুর উপজেলার কালিকাপুর গ্রামে মৃত সাথী ও বিথীর বাড়িতে যান। এ সময় পাবনার সিভিল সার্জন ডা. মেহেদী ইকবাল ও ফরিদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. লুলু ওয়াল মারজান উপস্থিত ছিলেন।
তদন্ত দলের সদস্যরা মৃত দুই বোনের বাবা-মাসহ স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন। এর আগে তাঁরা পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক, চিকিৎসক ও সিভিল সার্জনের সঙ্গে সাক্ষাত করে বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজ-খবর নেন। প্রাথমিকভাবে তাঁরা ধারণা করছেন, খাদ্য বিষক্রিয়ায় ওই দুই বোনের মৃত্যু হয়েছে। অন্যরা গণমনোবিজ্ঞানজনিত অসুস্থতায় ভুগছেন।
এদিকে, উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে আজ বিকেল ৩টায় পাবনা সিভিল সার্জন কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীদের পাবনার সিভিল সার্জন ডা. মেহেদী ইকবাল বলেন, যেহেতু একই পরিবারের ছোট দুই বোন পর পর দুইদিনের ব্যবধানে মারা গেছে, সেকারণে তাঁরা বিষয়টিকে গুরুত্ব সহকারে দেখছেন। বিষয়টি আইইডিসিআরকে জানানো হয়েছিল। তাঁরা এসে তদন্ত করে দেখছে। ঠিক কী কারণে দুই বোনের মৃত্যু হয়েছে সেটি খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন তাঁরা। এ ছাড়া বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় ফিরবেন বিশেষজ্ঞ দল। তাদের পরীক্ষা-নীরিক্ষার পর মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।
সিভিল সার্জন আরো জানান, তবে প্রাথমিকভাবে তাঁরা ধারণা করছেন, খাদ্যে বিষক্রিয়ার কারণে দুই বোনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মৃত্যুর কারণে আতঙ্কে মাস হিস্টিরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে গ্রামের অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। বিষয়টি নিয়ে গ্রামবাসীকে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শও দেন তিনি।
গত বৃহস্পতিবার বিকেলে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পর হঠাৎ অসুস্থ হয়ে বমি করতে শুরু করে দুই বোন সাথী ও বিথী। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার দিবাগত ভোররাতে বড় বোন সাথী ও পরদিন শুক্রবার রাতে হাসপাতালে ছোট বোন বিথীর মৃত্যু হয়। এ নিয়ে আতঙ্কে এলাকার অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ে।
মৃত সাথী ও বিথি ফরিদপুর উপজেলার হাদল ইউনিয়নের কালিকাপুর গ্রামের শহীদুল ইসলাম প্রামাণিকের মেয়ে। এদের মধ্যে সাথী খাতুন অষ্টম শ্রেণির ও বিথি চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী ছিল।
এ ঘটনার পর জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে একটি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়। ফরিদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. লুলু ওয়াল মারজানের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের একটি মেডিকেল টিম গতকাল রোববার সকালে ওই গ্রাম পরিদর্শন করেন। তাঁরা স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন এবং কয়েকজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন।