কোভিডের টিকা নিয়েও সরকার বিভ্রান্ত করছে : মির্জা ফখরুল
কোভিডের টিকা নিয়েও সরকার জনগণকে বিভ্রান্ত করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ বুধবার সন্ধ্যায় জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবুর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় তিনি এই অভিযোগ করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা দেখলাম যে, এই কোভিডে তারা কিভাবে পুরো বিষয়টাকে উদাসীনতা, অযোগ্যতা, ব্যর্থতা দিয়ে জনগণের জীবন-জীবিকাকে বিপন্ন করে ফেলেছে। এখন মানুষকে এতো বেশি তারা প্রতারণা করে, এতো মিথ্যা কথা বলে, এতো ভাওতাবাজী করে! দেখেন, টিকাই এখন পর্যন্ত পুরো সংগ্রহ হলো না এবং এখন পর্যন্ত তিন কোটি টিকাই আনতে পারল না ভারত থেকে।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘তারা (সরকার) এখন বলছে যে, ইউনিয়ন পর্যায়ে টিকা দেবে। এগুলো জাতিকে বিভ্রান্ত করা ছাড়া আর কিছু নয়। এই সরকার এই একটা জিনিস খুব ভালো পারে, অবলীলায় গোয়েবলসীয় পদ্ধতিতে মিথ্যা প্রচার করতে থাকে এবং সেই মিথ্যাকে সত্য প্রমাণিত করতে থাকে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, শিক্ষাব্যবস্থা একেবারে ধ্বংস করে দিয়েছে। আপনারা দেখেছেন যে, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের মতো একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একজন সন্ত্রাসী দলবাজ মহিলাকে অধ্যক্ষ করা হয়েছে। আমরা দেখলাম যে, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের যাদেরকে উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া হলো তারা দুর্নীতি করছে, নিয়োগ দুর্নীতি করছে। এভাবে তারা শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করে ফেলেছে এবং এই করোনার অজুহাতে তারা শিক্ষা বন্ধ করে দিয়েছে। স্বাস্থ্য ব্যবস্থা তো পুরোপুরি ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে। ব্যাংকিং সেক্টরকে গিলে ফেলেছে। তারা আমাদের সমস্ত অর্জনগুলোকে ধ্বংস করছে।
বর্তমান সংকট উত্তরণে আন্দোলনের বিকল্প নেই উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, আমরা এই অবস্থার পরিবর্তন চাই। সেজন্য আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া যিনি বন্দি হয়ে আছেন, তাঁদের নেতৃত্বে আজকে দল সংগঠিত হচ্ছে। আমাদেরকে আন্দোলনে যেতে হবে এবং এই ভয়াবহ যে দানব আমাদের বুকের ওপর চেপে বসে আছে, সেই দানবকে সরিয়ে দিতে হবে।
সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের মনে রাখতে হবে এই দানব ছোট-খাটো দানব নয়, এটা একটা ভয়াবহ দানব। এর মধ্যে আন্তর্জাতিক চক্রান্ত রয়েছে, সামাজ্যবাদ এবং আধিপত্যবাদের চক্রান্ত রয়েছে। সব মিলিয়ে আমাদের অত্যন্ত শক্তি নিয়ে, আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে, জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে এদেরকে সরাতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশের মানুষকে জাগাতে হবে, তাদেরকে নতুন স্বপ্ন দেখাতে হবে। মানুষকে সেই সুদিনের গান শুনাতে হবে যেন তারা জেগে ওঠেন। তাদেরকে সেই পথ দেখাতে হবে। সেই পথ নিশ্চয়ই আমাদের নেতা তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যেতে সক্ষম হব।
কোভিডকে পুঁজি করে ওরা লুট করেছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, যখন বৈশ্বিক মহামারি কোভিড-১৯ করোনাভাইরাস পৃথিবীর সমস্ত মানুষের জীবনকে এলোমেলো করে দিচ্ছে, বিশেষ করে বাংলাদেশের মতো একটি জনবহুল দেশে সাধারণ মানুষের জীবন ও জীবিকাকে বিপন্ন করে ফেলেছে। সেই সময়ে আওয়ামী লীগ সরকার সেই কোভিডকে পুঁজি করে তারা জনগণকে লুট করছে। তারা রাষ্ট্রের সম্পদ লুট করছে।
বিএনপির এ শীর্ষস্থানীয় নেতা বলেন, যে কষ্টার্জিত অর্থ ট্যাক্স হিসেবে মানুষ দেয়, আমাদের প্রবাসীরা বিদেশে গিয়ে যে রেমিট্যান্স পাঠায়, আমাদের শ্রমিকেরা গার্মেন্টেসে কাজ করে যে অর্থ উপার্জন করে, সেই অর্থ তারা লুট করে নিয়ে যাচ্ছে। এটা আমার কথা নয়, এটা আপনি যেকোনো অর্থনীতিবিদ, পত্রপত্রিকা, তারাও পরিষ্কার করে লিখছে এখন একটা লুটের রাজত্ব চলছে। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য আওয়ামী লীগ আসলে প্রকৃতিগতভাবে, চরিত্রগতভাবে, তারা একটা লুটেরা শ্রেণির প্রতিনিধি তারা। আমরা দেখেছি ১৯৭২-৭৫ সালে তারা ঠিক একইভাবে লুট করেছে, এখন আবার দেখছি। গত ১২ বছরে তারা সেই লুটের রাজত্ব চালিয়ে যাচ্ছে।