কুলাউড়ায় নিজ গ্রামে শায়িত ভাষাসৈনিক রওশন আরা বাচ্চু
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলায় ভাষাসৈনিক রওশন আরা বাচ্চুর জানাজার পর দাফন সম্পন্ন হয়েছে। আজ বুধবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার নবীন চন্দ্র মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে উছলাপাড়া গ্রামে পৈতৃক বাড়িতে তাঁকে দাফন করা হয়।
জানাজার আগে উপস্থিত থেকে ভাষাসৈনিক রওশনকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান জেলা প্রশাসক (ডিসি) নাজিয়া শিরিন, পুলিশ সুপার (এসপি) ফারুক আহমদ, ভাষা রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ডা. এম এ মুক্তাদির, বিভিন্ন জনপ্রতিনিধি, স্থানীয় রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সংগঠনের নেতারা।
গতকাল মঙ্গলবার ভোরে রাজধানীর অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন রওশন আরা বাচ্চু। তাঁর মেয়ে তানভির ফারহানা ওয়াহিদ বলেন, ‘মা বেশ কদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন। অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। গতকাল ভোর সাড়ে ৩টার দিকে তিনি মারা যান।’
রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে ১৪৪ ধারা ভেঙে আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন এই ভাষাসৈনিক।
১৯৩২ সালের ১৭ ডিসেম্বর মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার উছলাপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন রওশন আরা। তাঁর বাবা এ এম আরেফ আলী ও মা মনিরুন্নেসা খাতুন। পিরোজপুর গার্লস স্কুল থেকে ম্যাট্রিক ও বরিশালের ব্রজমোহন কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাস করেন রওশন। পরে ১৯৫৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনে স্নাতক ও পরে ইতিহাসে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দিনগুলোতে গণতান্ত্রিক প্রগ্রেসিভ ফ্রন্টে যোগ দিয়ে ছাত্র রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন রওশন আরা। সলিমুল্লাহ মুসলিম হল ও উইম্যান স্টুডেন্টস রেসিডেন্সের সদস্যও নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি।
ঢাকার আনন্দময়ী স্কুল, লিটন অ্যাঞ্জেলস, আজিমপুর গার্লস স্কুল (খণ্ডকালীন), নজরুল একাডেমি, কাকলি হাই স্কুল ও পরে আলেমা একাডেমিসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন রওশন আরা। সবর্শেষ ২০০০ সালে বিএড কলেজে অধ্যাপক হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন তিনি।