কিশোরগঞ্জে পোলট্রি ফিডের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ
কিশোরগঞ্জে সম্প্রতি পোলট্রি ফিডের (খাদ্য) অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে তিন হাজার খামার বন্ধ হয়ে গেছে বলে দাবি করেছে পোলট্রি খামার রক্ষা জাতীয় পরিষদের জেলা শাখা। আজ বুধবার দুপুর ১২টায় শহরের আখড়া বাজার শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম চত্বরে সংগঠনের উদ্যোগে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন ও সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
সংগঠনের নেতাদের দাবি, পোলট্রি খাদ্যের মূল্য বারবার অস্বাভাবিক বৃদ্ধির কারণে খামারিরা ডিম ও মুরগির ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় সারা দেশের মতো কিশোরগঞ্জ জেলায় প্রায় সাড়ে তিন হাজার খামার বন্ধ হয়ে গেছে। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পোলট্রি খামার রক্ষা জাতীয় পরিষদের জেলা শাখার সভাপতি এ কে ফজলুল হক দুলু।
এ সময় অন্যদের মধ্যে পোলট্রি ফিড ডিলার মালিক সমিতির সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক একে এম শামসুল ইসলাম খান মাসুম, পোলট্রি খামার রক্ষা জাতীয় পরিষদের জেলা কমিটির সিনিয়র সহসভাপতি শহীদ মল্লিক, সাধারণ সম্পাদক মো. সাদেকুর রহমান, সহসাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াদুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম ও অর্থ সম্পাদক শেখ ওবায়দুল্লাহ স্থানীয় খামারিরা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা জানান, জেলায় পোলট্রি শিল্পের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত প্রায় তিন লাখ লোকের জীবিকা নির্বাহ করে। এর মধ্যে রয়েছে পোলট্রি খামার মালিক, পোলট্রি খাদ্য বিক্রেতা, ঔষধ বিক্রেতা, ডিম বিক্রেতা, খাঁচা বিক্রেতা, পরিবহণ, শ্রমিকদের পরিবার। কিন্তু পোলট্রি খাদ্যের উচ্চ মূল্যের কারণে খামারিরা দিনের পর দিন লোকসান গুনছেন। প্রতিটি ডিমের উৎপাদন খরচ প্রায় নয় টাকা ৮০ পয়সা। বর্তমানে খামারিরা একটি ডিম বিক্রি করছেন আট টাকায়। এর ফলে প্রতিটি ডিমে লোকসান হচ্ছে বকে টাকা ৮০ পয়সা। গত ১৮ মাসে প্রতি ৫০ কেজি খাদ্যের মূল্যবৃদ্ধি পেল এক হাজার ২০০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। তার উপর আছে ব্যাংক ঋণের চাপ। এর ফলে প্রান্তিক খামারিরা টিকে থাকতে না পেরে খামারগুলো ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে অচিরেই বাদবাকি প্রান্তিক খামার বন্ধ হয়ে যাবে। সেই সঙ্গে লাখ লাখ মানুষ নতুনভাবে বেকার হয়ে যাবে।
সংবাদ সম্মেলনে সম্ভাবনাময় পোলট্রি শিল্পকে বাঁচাতে সরকারের কাছে চার দফা দাবি পেশ করেন। এর মধ্যে রয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে ডিম ও মুরগির মূল্য ভিন্ন ভিন্ন ভাবে খামারি মূল্য, আড়তদার মূল্য এবং ভোক্তা পর্যায়ের মূল্য নির্ধারণ, প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, ভোক্তা অধিকার, খামারি প্রতিনিধি, ফিডমিল প্রতিনিধি ও হ্যাচারি মালিক প্রতিনিধিদের নিয়ে জাতীয় কমিটি গঠন করে এক মাস অন্তর পোলট্রি পণ্যের মূল্য নির্ধারণ, পোলট্রি বাচ্চার মূল্য ও খাদ্যের মূল্যে ভর্তুকি প্রদান এবং পোলট্রি খাদ্যের মূল্য সহনীয় রাখতে সরকারের পক্ষ থেকে যথাযথ নিয়মিত তদারকি কার্যক্রম পরিচালনা।
সংবাদ সম্মেলন শেষে সংগঠনের আয়োজনে খামারিরা ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। পরে একটি বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।