কাউন্সিলর ইরফান কোয়ারেন্টিনে
ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজি মো. সেলিমের মেজ ছেলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোহাম্মদ ইরফান সেলিম কারাগারের সাধারণ সেলে ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকবেন। ইরফান সেলিমের দেহরক্ষী মো. জাহিদকেও ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। গতকাল সোমবার এক বছরের সাজা দেওয়া শেষে তাঁদের কেরানীগঞ্জের কারাগারে পাঠান ভ্রাম্যমাণ আদালত।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মাহবুবুল ইসলাম আজ মঙ্গলবার সকালে এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘করোনাকালে যাঁদের কারাগারে আনা হয়, প্রথম ১৪ দিন তাঁদের কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়। এটি একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) শঙ্কায় এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এ ছাড়া যাঁদের জ্বর-সর্দি থাকে, তাঁদের আমরা আরো কঠোরভাবে মনিটর করি। যাতে কোনোভাবে বন্দি দ্বারা ভাইরাসটি না ছড়ানোর সুযোগ পায়, সেদিকে আমাদের বিশেষ নজর থাকে। এ চিন্তা থেকে কারাবন্দিদের নতুন একটি ভবনে রাখা হয়।’
গত রোববার রাতে নৌবাহিনীর লেফটেন্যান্ট ওয়াসিফ আহমদ খানের ওপর হামলার ঘটনায় মারধর ও হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগে এনে কাউন্সিলর মোহাম্মদ ইরফান সেলিম ও হাজি মো. সেলিমের গাড়িচালক মিজানুর রহমানসহ অজ্ঞাত তিন-চারজনের বিরুদ্ধে রাজধানীর ধানমণ্ডি থানায় মামলা করেন ওয়াসিফ।
মামলার পর গতকাল সোমবার র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) রাজধানীর চকবাজারের ‘চাঁন সরদার দাদা বাড়ী’তে অভিযান চালায়। অভিযানের নেতৃত্ব দেন র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম। অভিযান শেষে অবৈধ ওয়াকিটকি ও মাদক রাখার দায়ে গতকাল মোহাম্মদ ইরফান সেলিম ও তাঁর দেহরক্ষী মো. জাহিদকে এক বছর করে কারাদণ্ডাদেশ দেন র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত।
গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার প্রধান লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ রাজধানীর চকবাজারে হাজি সেলিমের বাসার নিচে সাংবাদিকদের জানান, অবৈধ ওয়াকিটকি রাখার দায়ে ছয় মাস এবং মাদক রাখা ও সেবনের দায়ে ছয় মাস করে মোট এক বছর কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম। এ ছাড়া তাঁর কক্ষ থেকে লাইসেন্সবিহীন বিদেশি অস্ত্র, একটি একনলা বন্দুক, একটি ব্রিফকেস, মদ ও ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে।
আশিক বিল্লাহ বলেন, ‘তাঁদের কাছ থেকে বেশ কিছু অবৈধ জিনিসপত্র পাওয়া গেছে। এ ছাড়া দেহরক্ষী মো. জাহিদের কাছ থেকে ৪০০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে এবং বিভিন্ন ধরনের ৩৮ থেকে ৪০টি ওয়াকিটকি উদ্ধার করা হয়েছে। যেগুলো আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বাহিনী ব্যবহার করে থাকে।’
আশিক বিল্লাহ বলেন, ‘এ ছাড়া আমরা তাঁদের কাছ থেকে গুলি, হাতকড়া, একটি ড্রোন এবং কন্ট্রোল রুম থেকে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন তিনটি ভেরি হাই সিকিউরিটি সেট (ভিএইচএস) উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছি। এটা ওয়াকিটকির একটি আধুনিক সংস্করণ। এ ছাড়া ওই বাসায় টর্চার সেলের সন্ধান পাওয়া গেছে। টর্চার সেলে হাড়, ছুরি, হকস্টিক ও দড়ি পাওয়া যায়।’