কলেজছাত্রীর ফেসবুক পোস্ট দেখে চাল-ডাল নিয়ে হাজির ডিসির প্রতিনিধিদল
ফরিদপুরের রাজেন্দ্র কলেজের একাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী দিল আফরোজ শ্রাবণীর ফেসবুক পোস্টে সাড়া দিয়ে ১২ পরিবারকে খাদ্যসামগ্রী দিয়েছেন জেলা প্রশাসক (ডিসি) অতুল সরকার।
আফরোজ শ্রাবণী করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের সময় কর্মহীন হয়ে পড়া ১০ অভুক্ত পরিবারকে নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে ছিলেন ডিসি অতুল সরকারকে ট্যাগ করে। এরপর ডিসি সেই পোস্ট দেখে দ্রুত সময়ের মধ্যে সেই ১০ অভুক্ত পরিবারসহ ১২ পরিবারের খাদ্য সহায়তার ব্যবস্থা করেন।
গতকাল বুধবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে ফরিদপুর শহরতলীর বায়তুল আমান এলাকার আমিন দোকান গ্রামে ডিসির প্রতিনিধিদল সেখানে যায়। এতে নেতৃত্ব দেন এনজিও পিডব্লিউওর নির্বাহী পরিচালক মো. হাফিজুর রহমান। এ সময় তারা ১২ পরিবারের হাতে ১০ কেজি করে চাল, এক কেজি করে ডাল, এক কেজি করে আলু, এক কেজি করে লবণ, এক লিটার সয়াবিন তেল ও একটি সাবান তুলে দেন।
এ ব্যাপারে প্রতিনিধিদলে থাকা আরেক এনজিও বিএফএফের নির্বাহী পরিচালক আ ন ম ফজলুল হাদি সাব্বির বলেন, ‘রাতে ওই পোস্ট দেখে ডিসি স্যার আমাদের আহ্বান জানান রাতের মধ্যেই কিছু করতে পারি কি না। ডিসি স্যারের আহ্বানে পিডব্লিউওয়ের নির্বাহী পরিচালক মো. হাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে আমরা সেখানে যাই। এরপর সেখানে থাকা ১২টি পরিবারের হাতে খাদ্য সহায়তা তুলে দেওয়া হয়।’ তিনি বলেন, ‘স্যার পোস্ট দেখে এত দ্রুত ওই রাতেই কিছু করার বিষয়টি অনুভব করেছেন এটা আসলেই আমাদের জন্য একটা বিরাট উদাহরণ।’
জানা যায়, কদিন আগেই সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের একাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের এই শিক্ষার্থী ফরিদপুরের ডিসির ব্যতিক্রমধর্মী উদ্যোগ ‘মিট দ্য ডিসি’ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে। তখন ডিসির কাছ থেকে অনুপ্রেরণা পেয়ে ছিল দেশের জন্য কিছু করতে হবে যার যার অবস্থান থেকে। আর সেই কথাকে স্মরণ করে করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের সময় কর্মহীন হয়ে পড়া ১০টি অভুক্ত পরিবারকে নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেয় ডিসি অতুল সরকারকে ট্যাগ করে। এরপর ডিসি সেই পোস্ট দেখে দ্রুত সময়ের মধ্যে সেই ১০ অভুক্ত পরিবারসহ ১২ পরিবারকে খাদ্য সহায়তার ব্যবস্থা করেন।
নিচে দিল আফরোজ শ্রাবণী সেই পোস্টটি দেওয়া হলো :
“আসসালামুআলাইকুম, স্যার। আমি দিল আফরোজ শ্রাবণী। সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের একাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের একজন শিক্ষার্থী।
আমি ষষ্ঠ ‘মিট দ্য ডিসি’ অনুষ্ঠানে আপনার একজন প্রতিনিধি হিসেবে গিয়েছিলাম। আমাদের বাড়ি আমিন দোকান, উত্তর সাদিপুর, বায়তুল আমান।
সাম্প্রতিক করোনা ভাইরাসের ভয়াবহ করাল গ্রাসের প্রভাব আমাদের এই এলাকাতে গভীরভাবে পড়েছে। এখানে বেশকিছু হতদরিদ্র পরিবার বাস করে এদের মধ্যে ১০টি পরিবারের অবস্থা খুবই করুণ। এই ১০টি পরিবারের মধ্যে সত্তরোর্ধ্ব তিনজন, মূক ও বধির প্রতিবন্ধী একজন, একজন কোমায় আছেন বাকিরা পিতৃহীন এবং অসহায়।”