করোনা : ২৪ ঘণ্টায় ১ লাখ ৬৭ হাজার ফোন
করোনাভাইরাস সংশ্লিষ্ট বিষয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় এক লাখ ৬৭ হাজার মানুষ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হটলাইনে ফোন দিয়েছে। কেউ উপসর্গ নিয়ে পরীক্ষার জন্য, কেউ বা টেলিফোনে চিকিৎসার জন্য, কেউ তাৎক্ষণিক করণীয় নিয়ে। এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৭ হাজার ৩৪টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। আগের নমুনাসহ মোট পরীক্ষা করা হয় ১৮ হাজার ৯৯টি।
এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা আজ রোববার বিকেলে এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘হটলাইনে আসা এসব ফোনের মধ্যে সবাই করোনা উপসর্গ নিয়ে ফোন দেন, তা কিন্তু নয়। কেউ কেউ উপসর্গ নিয়ে ফোন দেন, কেউ সামান্য জ্বর সর্দি হলেই ফোন দেন। অনেকে নমুনা সংগ্রহ, প্রাথমিক চিকিৎসার জন্যও ফোন দিয়ে থাকেন। আমরা চেষ্টা করি, সঠিক গাইডলাইন দিয়ে যাচাই-বাছাই করে নমুনা সংগ্রহের। সে কারণে ফোনের তুলনায় নমুনা সংগ্রহ কম হতে পারে। তাছাড়া কিছু সীমাবদ্ধতাও আছে।’
এ ছাড়া দেশে গত ৮ মার্চ করোনাভাইরাস ধরা পড়ার পর থেকে গত তিন মাস ২০ দিনে মোট এক কোটি ৩৪ লাখ ১১ হাজার ৭৫১টি ফোন কল এসেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে। এই সময়ে মোট নমুনা পরীক্ষা হয়েছে সাত লাখ ৩০ হাজার ১৯৭টি।
এসবের মধ্যে ২৪ ঘণ্টায় করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে তিন হাজার ৮০৯ জন। এ নিয়ে দেশে মোট এক লাখ ৩৭ হাজার ৭৮৭ জন করোনায় আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ২১ দশমিক ০৫ শতাংশ।
এর আগে আজ রোববার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আয়োজিত নিয়মিত বুলেটিনে অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় আরো ৪৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়ে এক হাজার ৭৩৮ জনের মৃত্যু হলো।
মৃতদের মধ্যে পুরুষ ৩১ জন এবং নারী ১২ জন। এ ছাড়া মৃতদের মধ্যে ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে দুজন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে একজন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে সাতজন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ১৩ জন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ১২ জন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে সাতজন, ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে একজন।
বিভাগ অনুযায়ী মৃতদের মধ্যে ঢাকা বিভাগের ২১ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১০ জন, রাজশাহী বিভাগে দুজন, খুলনা বিভাগে তিনজন, বরিশাল বিভাগের দুজন, সিলেট বিভাগে তিনজন, রংপুর বিভাগে একজন, ময়মনসিংহ বিভাগে একজন।
দেশে গত ৮ মার্চ প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী পাওয়ার কথা জানানো হয় এবং প্রথম মৃত্যু ঘটে গত ১৮ মার্চ। এরপর গত ১৪ এপ্রিল ৩৮তম দিনে করোনা রোগীর সংখ্যা এক হাজারে দাঁড়ায়। বর্তমানে দেশে এক লাখ ৩৭ হাজার ৭৮৭ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ৬৫টি ল্যাবে নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা করা হয়েছে।
এদিকে, বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বিশ্বে মৃতের সংখ্যা আজ রোববার বেড়ে দাঁড়িয়েছে পাঁচ লাখ এক হাজার ৫৮৫ জনে।
বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের সর্বশেষ পরিসংখ্যান জানার অন্যতম ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্য অনুযায়ী, করোনাভাইরাসে এ পর্যন্ত আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে বিশ্বের এক কোটি ৯৭ হাজার ৩৩৪ জন। তাদের মধ্যে বর্তমানে ৪১ লাখ ২২ হাজার ৪০১ জন চিকিৎসাধীন এবং ৫৭ হাজার ৮২৩ জন (২ শতাংশ) আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছে। এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে ৫৪ লাখ ৭৩ হাজার ৩৪৮ জন সুস্থ হয়ে উঠেছে।
গত বছরের ডিসেম্বরে চীন থেকে উৎপত্তি হওয়া প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস বাংলাদেশসহ বিশ্বের ২১৩টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে।
গত ১১ মার্চ করোনাভাইরাস সংকটকে মহামারি ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)