করোনা মোকাবিলায় চমেক হাসপাতালে চিকিৎসা সামগ্রী
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ড ও আইসিইউ ওয়ার্ডের চিকিৎসকদের নিরাপত্তা দেবে প্লাজমা-ভাইরাস স্টেরিলাইজার এয়ার ক্লিনার।
আজ বৃহস্পতিবার চমেক হাসপাতালে করোনা চিকিৎসকদের জন্য এই এয়ার ক্লিনার বসানো হয়। বিভিন্ন দেশে অবস্থান করা চট্টগ্রাম সরকারি কলেজের ৮৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহযোগিতায় চিকিৎসকদের নিরাপত্তায় এয়ার ক্লিনার ছাড়াও করোনা রোগীদের জন্য তিনটি হাই ফ্লো নাসাল ক্যানোলা, চারটি সিরিঞ্জ পাম্প ও ইসিজি মেশিনসহ নানা সরঞ্জাম দেওয়া হয়। চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. হুমায়ুন কবির এসব সামগ্রী গ্রহণ করেন।
যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করা চট্টগ্রাম সরকারি কলেজের ৮৫তম ব্যাচের সমম্বয়কারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ হাবীব উল্লাহ জানান, প্লাজমা স্টেরিলাইজার করোনাভাইরাস ধ্বংস করার একটি মেশিন। চমেক হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ড ও আইসিইউ চিকিৎসকদের জন্য এটি পাঠানো হয়েছে। এয়ার মেশিনটি হেপা ফিল্টার আর কার্বন ফিল্টারের মাধ্যমে জীবাণু সরিয়ে ফেলে। শেষ ধাপে প্লাজমা কেমিক্যাল জারণের মাধ্যমে করোনা জীবাণুকে পুরোপুরি ধ্বংস করে চিকিৎসকদের নিরাপত্তা দেবে বলে জানান তিনি।
চমেক হাসপাতালের চিকিৎসক হারুন অর রশিদ জানান, চট্টগ্রাম কলেজের ৮৫তম ব্যাচের বন্ধুদের এ উদ্যোগে অন্যরা নিঃসন্দেহে উৎসাহিত হবে। করোনা একটি মারাত্মক ছোঁয়াচে রোগ। চিকিৎসকরা প্রচণ্ড ঝুঁকিতে কাজ করছেন। প্লাজমা ভাইরাস স্টেরিলাইজারের কল্যাণে চিকিৎসকরা নির্ভয়ে মুমূর্ষু রোগীদের সেবা দিতে পারবেন।
যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী চট্টগ্রাম কলেজের ৮৫তম ব্যাচের সরোয়ার কামাল জানান, কঠিন এ সময়ে দেশের চিকিৎসক ও রোগীদের জন্য চিকিৎসা সামগ্রী পাঠিয়েছি। এর মধ্যে চীন ও কোরিয়া থেকে আনা তিনটি হাই ফ্লো নাসাল ক্যানোলা, চারটি সিরিঞ্জ পাম্প, ইসিজি মেশিন ঢাকা বিমানবন্দরে কাস্টমসে আটকে দেওয়া হয়। চীন থেকে আসার কারণে বিপজ্জনক বস্তু ঘোষণা করায় হয়রানির শিকার হতে হয়েছে। কাস্টমস, ভ্যাটসহ নানা ধরনের অতিরিক্ত ফি গুণতে গিয়ে ঝামেলা পোহাতে হয়েছে। করোনার জন্য স্বেচ্ছাশ্রমে আনা চিকিৎসা সামগ্রী গ্রিন চ্যানেলে আমদানি ও সহজ পদ্ধতি বের করার দাবি জানান তিনি।
চমেক হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক তনুজা তানজিন বলেন, ‘চট্টগ্রাম কলেজের ৮৫তম ব্যাচের বন্ধু চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক সাবরিনা ইসলাম সুইটি করোনায় আক্রান্ত হয়ে বেসরকারি হাসপাতালে প্রচণ্ড শ্বাসকষ্টে হাই ফ্লো নাসাল ক্যানোলার অভাবে মারা যান। চট্টগ্রামে চিকিৎসাব্যবস্থার করুণ অবস্থার কথা চিন্তা করে চট্টগ্রাম সরকারি কলেজের ৮৫তম ব্যাচের বন্ধুরা সবাই মিলে এ উদ্যোগ নিয়েছে, যাতে আমাদের বন্ধু সুইটির মতো আর কেউ অকালে ঝড়ে না পড়েন, পুরো চট্টগ্রামবাসীর যাতে শ্বাসকষ্ট লাঘব হয়।’
চমেক হাসপাতালে এসব সামগ্রী হস্তান্তর অনুষ্ঠানে হাসপাতালটির পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. হুমায়ুন কবির, আইসিইউ বিভাগের প্রধান অধ্যাপক রঞ্জন কুমার নাথ কাজল, চট্টগ্রাম সরকারি কলেজের ৮৫তম ব্যাচের সদস্য অধ্যাপক জেসমিন আহমদ, সহযোগী অধ্যাপক ডা. খুরশীদ এ সারওয়ার, সহকারী অধ্যাপক ডা. বর্ণালী বড়ুয়া, অধ্যাপক সুমন বিশ্বাস, কাফকোর ডিজিএম ইঞ্জিনিয়ার মনজুর জাহেদ খোকা, অধ্যাপক এ কে এম শামসুদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।