করোনার মধ্যে ভাড়া মওকুফ করে দিলেন বাড়িওয়ালা
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যে সরকারঘোষিত সামাজিক বিচ্ছিন্নকরণ নিয়মের কারণে নিম্নআয়ের লোকজনের আয়-রোজগার না থাকায় কিশোরগঞ্জের ভৈরবে এক মাসের বাড়িভাড়া মওকুফ করে দিলেন একজন বাড়িওয়ালা। তিনি তাঁর বাড়ির ১০টি ঘরের ভাড়াটিয়ার ভাড়া মওকুফ করে মানবিকতা দেখিয়েছেন।
এই বাড়িওয়ালার নাম মো. নবী হোসেন। তিনি শহরের কমলপুর পঞ্চবটী পুকুরপাড় গ্রামের বাসিন্দা এবং জাতীয় শ্রমিক জোটের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সভাপতি ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা মরহুম মোমতাজ উদ্দিনের দ্বিতীয় ছেলে। শ্রমিক নেতা মরহুম মোমতাজ স্পষ্টভাষী ছিলেন বলে তিনি এলাকায় ‘হককথা মমতাজ’ নামে পরিচিত ছিলেন।
নবী হোসেন জানান, পৈতৃক সম্পত্তি হিসেবে তিনি বাড়িটি পেয়েছেন। এই বাড়ি থেকে আদায় করা ভাড়ায় তাঁর পরিবার চলে। এখানে ১০ জন দিনমজুর তাঁদের পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করেন। এখন তাঁরা বাইরে যেতে পারছেন না। ফলে তাঁদের দৈনন্দিন আয়ের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। বাড়িভাড়া তো দূরের কথা, তাঁদের জন্য প্রতিদিনের খাবার জোগাড় করাই কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। এসব দিক বিবেচনায় নিয়ে তাঁদের মার্চ মাসের বাড়ি ভাড়ার টাকা মওকুফ করে দেওয়ার কথা জানান তিনি।
ভাড়াটিয়া আবদুর রহিম, সেলিম মিয়া ও শাহ আলম জানান, তাঁরা প্রত্যেকে মাসিক দেড় হাজার টাকা ভাড়ায় এই বাড়িতে থাকেন। সবাই দিনমজুর। কাজকর্ম বন্ধ থাকায় মাস শেষে বাড়িভাড়া নিয়ে একটা বাড়তি চাপ ছিল। এখন সেই চাপটি কেটে গেছে।
স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর মমিনুল হক রাজু জানান, নবী হোসেনের এই উদ্যোগ ভৈরবের বিত্তবান বাড়িওয়ালাদের জন্য একটি বিশেষ বার্তা। স্বল্প পরিসর থেকে তিনি যদি এমন উদ্যোগ নিতে পারেন, তবে যাঁরা সামর্থ্যবান বাড়ির মালিক আছেন, এই সংকটকালে স্বল্প আয়ের ভাড়াটিয়াদের পাশে তাঁদেরও দাঁড়ানো উচিত।