করোনার টিকা পেতে ২৬ জানুয়ারি থেকে আবেদন শুরু
আগামী ২১ থেকে ২৫ জানুয়ারির মধ্যে ভারত থেকে দেশে আসছে করোনার ৫০ লাখ ডোজ টিকা। আর ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে টিকার প্রয়োগ শুরু হবে। প্রথমধাপে ডাক্তার-নার্সসহ ৫০ লাখ সম্মুখযোদ্ধা টিকা পাবেন। টিকা পেতে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নম্বর দিয়ে অনলাইনে নিবন্ধন করতে হবে। অ্যাপ ও সফটওয়্যারের মাধ্যমে আগামী ২৬ জানুয়ারি থেকে আবেদন শুরু হবে। তবে ১৮ বছরের কম বয়সী ও গর্ভবতী মায়েরা টিকা পাবেন না।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ (এবিএম) খুরশীদ আলম আজ সোমবার রাজধানীর মহাখালীতে অধিদপ্তরে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান।
করোনার টিকা কিভাবে দেওয়া হবে সেই পরিকল্পনা সম্পর্কে জানাতে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা বাংলাদেশে এনে জেলাপর্যায় পর্যন্ত পৌঁছে দেবে বেক্সিমকো। এরপর কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবকের ওপর এই ভ্যাকসিন প্রয়োগসহ অন্যান্য প্রস্তুতি সম্পন্ন করার পর সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, ‘সিরাম ইনস্টিটিউটের বিদেশে রপ্তানির ক্ষেত্রে যে সমস্ত আইন-কানুন আছে, সেটা করতে তাদের এই সময়টুকু লাগবে। তবে এর মধ্যে যেকোনো দিনই ২১ থেকে ২৫ এর মধ্যে যেকোনো দিন তারা এটা এখানে নিয়ে আসতে পারবে।’
এ সময় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লাইন ডিরেক্টর ডা. শামসুল হক বলেন, ‘এখানে যারা ভ্যাক্সিনেটর হিসেবে যারা থাকবে বা স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে এনলিস্টেট হতে চান অল্প কিছু সংখ্যক মানুষ, তাদের ওপর টিকা দিয়ে আমরা অবজার্ভ করব। আমরা গতকালকেও বলেছি, আমাদের সাতটা দিন একটা পরিকল্পনা আছে। সাতটা দিন পরেই আমরা একদম ফিল্ডে কাজ শুরু করে দেব। ফেব্রুয়ারি ফার্স্ট উইক থেকে জাতীয় পর্যায়ে শুরু হয়ে যাবে।’
এক ডোজ টিকা নেওয়ার প্রায় দুইমাস পর দ্বিতীয় ডোজ নিতে হবে। এই হিসেবে প্রথম দফার টিকা পাবেন, ডাক্তার, নার্স, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, গণমাধ্যমকর্মী, জনপ্রতিনিধি, জরুরি সেবা সংস্থার কর্মী, বিভিন্ন বন্দরের কর্মী এবং বয়স্ক জনগোষ্ঠী। টিকা পেতে আগ্রহীদের আবেদন করার জন্য অ্যাপস ও সফটওয়্যার প্রস্তুত করা হয়েছে। আগামী ২৬ জানুয়ারি থেকে আবেদন নেওয়া শুরু হবে। এসএমএসের মাধ্যমে সংশ্লিষ্টকে জানিয়ে দেওয়া হবে কখন, কোথায় কোন সেন্টারে ভ্যাকসিন নিতে হবে।
ডা. শামসুল হক বলেন, ‘প্রথম মাসের মধ্যে আমাদের দেশের ৭০ বছরের ঊর্ধ্বে সব ব্যক্তিকে এবং আমাদের যে উদ্দিষ্ট অন্যান্য গ্রুপে যারা আছেন, তারা থাকবেন। যারা প্রথম মাসে প্রথম ডোজ পাবেন, তারা তৃতীয় মাসে দ্বিতীয় ডোজ পাবেন। যারা দ্বিতীয় মাসে প্রথম ডোজ পাবেন, তারা চতুর্থ মাসে দ্বিতীয় ডোজ পাবেন। ৬৪ বছরের ঊর্ধ্বে সবাইকে আমরা পঞ্চম মাসে ডোজ দিয়ে দেব।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, দেড় কোটি মানুষের জন্য আমরা তিন কোটি ডোজ টিকা পাব। ছয় মাসে পর্যায়ক্রমে সব টিকা দেশে আসবে। প্রথম দফায় ভারত থেকে ৫০ লাখ ডোজ করোনার টিকা আসবে। এই টিকা দেওয়ার পরে আমরা দ্বিতীয় ডোজের জন্য আট সপ্তাহ সময় পাব। তখন আমাদের পরবর্তী চালান চলে আসবে। সে সময় আমরা বেশি সংখ্যক লোককে ভ্যাকসিন দিতে পারব।
ডা. এবিএম খুরশীদ আলম বলেন, টিকার নিরাপত্তার ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পুরোদমে কাজ করবে। তারা ঢাকার বাইরে দেশের যেকোনো অঞ্চলে ভ্যাকসিন পৌঁছে দেওয়ার কাজ করবে।
এ ছাড়া কোভ্যাক্সের মাধ্যমে ফাইজারের টিকা বাংলাদেশকে দেওয়ার যে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে তাতেও সম্মত সরকার। সেই টিকা পাওয়ার প্রস্তুতি চলছে বলে জানানো হয় ব্রিফিংয়ে।