করোনাভাইরাস : ‘দেশে বিস্তার রোধে ব্যবস্থা নিয়েছি’
প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘চীন বা যেসব দেশে করোনাভাইরাস দেখা গিয়েছে সেসব দেশ থেকে কেউ এলে তার সঠিকভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে আমরা নিশ্চিত হচ্ছি এই ভাইরাস নিয়ে কেউ ঢুকছে কি না। কাউকে এতটুকু সন্দেহ হলে হাসপাতালে নিয়ে তাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে কোয়ারান্টাইনে রেখে তারপর আমরা ছাড়ছি।’ তিনি বলেন, ‘এটা যেন বাংলাদেশে বিস্তার লাভ করতে না পারে সেজন্য যথাযথ ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি।’
আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় একাদশ জাতীয় সংসদের ষষ্ঠ অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনিত ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আলোচনা এবং অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এ সময় স্পিকারের দায়িত্ব পালন করছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী করোনাভাইরাস প্রসঙ্গে বলেন, ‘এটা যখন চীনে দেখা দেয় তখনই সরকার এ বিষয়ে প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ নিয়েছে এবং অন-এরাইভাল ভিসা বন্ধ করে দিয়েছে।’
অতীতে দেশে ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ার প্রসঙ্গ টেনে শেখ হাসিনা সবাইকে বাড়ি-ঘর এবং চারপাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রেখে এই রোগ সৃষ্টিকারী এডিস মশার বংশবিস্তার রোধ করার বিষয়েও সবাইকে পুনরায় সতর্ক করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ডেঙ্গু নিয়ে একটা সমসা সৃষ্টি হয়েছিল। আবারও মশার উপদ্রব বাড়ার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে আমি দেশবাসীকে বলবো নিজেদেরকেও একটু সচেতন থাকতে হবে এবং বাড়ি-ঘর পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে, যেন মশা না জন্মাতে পারে সে ব্যাপারে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে আসন্ন রমজান মাসে বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সমাগ্রীর সরবরাহকে সুষম রাখার মাধ্যমে দ্রব্যমূল্যকে জনগণের নাগালের মধ্যে রাখার জন্যও সংশ্লিষ্ট মহলকে নির্দেশনা দেন।
সন্ত্রাস, মাদক ও জঙ্গিবাদের মতো ধর্ষকদের বিরুদ্ধেও ‘জিরো টলারেন্স নীতি’ ঘোষণা করে এসব অপরাধের বিরুদ্ধে তাঁর সরকারের কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মানুষ নামের কিছু পশু ছোট শিশু থেকে শুরু করে মেয়েদের বিভিন্ন জায়গায় ধর্ষণ করছে। এদের বিরুদ্ধে আমরা কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
‘সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ এবং মাদকের বিরুদ্ধে যেমন ব্যবস্থা নিয়েছি তেমনি এখন আমরা সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, মাদক ও ধর্ষকের বিরুদ্ধে একইভাবে জিরো টলারেন্স ঘোষণা দিচ্ছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশবাসীকে আমি আহ্বান করব- এই ধরনের ঘটনা (ধর্ষণ) যারা ঘটাচ্ছে তাদের ধরতে সবারই যেন আমাদের সহযোগিতা করেন। কারণ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা আমরা আইনগতভাবেই নেব এবং এ বিষয়ে আমরা যথেষ্ট সচেতন রয়েছি।’
শেখ হাসিনা ‘করোনাভাইরাস’ প্রতিরোধ, ‘ডেঙ্গু’ প্রসঙ্গ, আসন্ন রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং দেশের ব্যাংকে টাকা নেই বলে বিরোধীদলীয় নেতার বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে দেশের বর্তমান রিজার্ভসহ আর্থ-সামাজিক অবস্থার উত্তরণের চিত্র তাঁর ভাষণে তুলে ধরেন।
প্রধানমন্ত্রী জানান, তাঁর সরকার চাচ্ছে দেশ যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে তা যেন চলমান থাকে। চলার পথে নানা সময় বিভিন্ন সমস্যা দেখা গেলে সরকার তাৎক্ষণিকভাবেই সেটা সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণ করে।