কক্সবাজার শহর থেকেই সরাসরি যাওয়া যাবে সেন্টমার্টিন
টেকনাফ নয় এবার কক্সবাজার শহর থেকেই বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে যাওয়া যাবে প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন।
কক্সবাজার থেকে ৯৫ কিলোমিটার বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে পৌঁছাবে ‘এম ভি কর্ণফুলী এক্সপ্রেস।’ আবার ৯৫ কিলোমিটার সমুদ্র পাড়ি দিয়ে কক্সবাজার ফিরবেও। প্রতিদিন ১৯০ কিলোমিটার রোমাঞ্চকর সমুদ্র ভ্রমণের সঙ্গে মেতে উঠবেন ৫৮২ জন যাত্রী। এ ছাড়া জাহাজ থেকে সমুদ্র, পাহাড় আর সূর্যাস্ত দৃশ্য উপভোগ করতে পারবেন যাত্রীরা।
আগামীকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ২টায় ‘সমুদ্র যাত্রা’ অনুষ্ঠান উদ্বোধনের মাধ্যমে এই যাত্রা শুরু হচ্ছে। প্রথম সমুদ্র যাত্রা উদ্বোধন করবেন নৌপরিবহন মন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। অনুষ্ঠানে অতিথি থাকবেন মহেশখালী কুতুবদিয়া আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ আবদুস সামাদ, সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তরের পরিচালক কমোডর সৈয়দ আরিফুল ইসলাম, জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন, জেলা পুলিশ সুপার এ বি এম মাসুদ হোসেন, ট্যুরিস্ট পুলিশের পুলিশ সুপার জিল্লুর রহমান, কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার এম এ রশিদ।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে জাহাজের দ্বার উন্মোচন, বঙ্গোপসাগরে বিচরণ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও মেজবান। উদ্বোধনের পরদিন শুক্রবার থেকেই পর্যটকরা এম ভি কর্ণফুলী এক্সপ্রেস জাহাজটিতে করে কক্সবাজার থেকে সরাসরি সাগর পথে সেন্টমার্টিন ভ্রমণ করতে পারবেন।
এখন সরাসরি কক্সবাজার থেকে সেন্টমার্টিন জাহাজ চলাচলের কারনে পর্যটকরা নানা হয়রানি থেকে রেহাই পাবে। কক্সবাজার থেকে সড়ক পথে টেকনাফ যাওয়া এবং সেখান থেকে জাহাজ করে সেন্টমার্টিন যাওয়ার বাড়তি ঝামেলা থেকে রক্ষা পাবে পর্যটকরা।
জাহাজটির কক্সবাজার এর পরিচালক ও ফারহান এক্সপ্রেস ট্যুরিজম এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম হোসাইনুল ইসলাম বাহাদুর জানান, কক্সবাজার শহরের উত্তর নুনিয়াছরা (এয়ারপোর্ট রোড) বিআই ডব্লিওটিএ ঘাট থেকে নিয়মিত সেন্টমার্টিন এর উদ্দেশে ছেড়ে যাবে জাহাজটি। কক্সবাজার ঘাট থেকে ছাড়বে প্রতিদিন সকাল ৭টায় । সেন্টমার্টিন থেকে ছাড়বে প্রতিদিন বিকেল ৩টায়। উভয় দিক থেকে গন্তব্যে পৌঁছাতে সময় লাগবে চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা। কিছু দিন পর সেন্টমার্টিন থেকে ফেরার সময় আরো ১ ঘণ্টা পেছানো হবে।
ভাড়া কত?
এম ভি কর্ণফুলী এক্সপ্রেস জাহাজ এর ইকোনমি আসনের (দ্বিতীয় শ্রেণি চেয়ার) ভাড়া জনপ্রতি দুই হাজার টাকা । এ ছাড়া বিজনেস শ্রেণি আসন (প্রথম শ্রেণি চেয়ার) ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে আড়াই হাজার টাকা। মোট ১৭টি লাক্সারি ক্লাস কেবিন রয়েছে এম ভি কর্ণফুলী এক্সপ্রেস জাহাজে। এদের মধ্যে ইকোনমি শ্রেণি কেবিনের (দ্বিতীয় শ্রেণি) ভাড়া ১২ হাজার টাকা ও লাক্সারি ক্লাস (ভিআইপি) কেবিনের ভাড়া ১৫ হাজার টাকা। প্রতিটি কেবিন দুজনের জন্য প্রযোজ্য। অতিরিক্ত জন প্রতি আলাদা সাধারণ টিকেট কেটে নিতে হবে । প্রতিটি টিকেটের সঙ্গে সৌজন্যমূলক নাস্তা অন্তর্ভুক্ত আছে। আর ভাড়া হছে আপ-ডাউন বা আসা-যাওয়াসহ। কোনো যাত্রী ভিন্ন তারিখে ফিরতে চাইলে তা টিকেট সংগ্রহ করার সময় উল্লেখ করতে হবে।
প্রায় ৫৫ মিটার দীর্ঘ ও ১১ মিটার প্রশস্ত জাহাজটি ঘণ্টায় প্রায় ১২ নটিক্যাল মাইল গতিতে ছুটতে পারে। ১৭টি ভিআইপি কেবিন সমৃদ্ধ এই নৌযানে ভিন্ন ক্যাটাগরির প্রায় ৫১০টি আসন ব্যবস্থা আছে। আরো আছে কনফারেন্স হল রুম, ডাইনিং স্পেস, সি ভিউ ব্যালকনি।
দীর্ঘদিন এ উপকূলীয় পথে অভিজ্ঞ মাস্টার ও ক্রু দিয়ে জাহাজটি পরিচালনা করা হবে। জাহাজের যাত্রীদের নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশ নিযুক্ত থাকবে বলে আশা করা যাচ্ছে।