কক্সবাজারে সাইকেলে করোনা বার্তা দিচ্ছেন আইওএম স্বেচ্ছাসেবকরা
কক্সবাজার শহরে ও রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে করোনাভাইরাস সম্পর্কিত তথ্য প্রচার করছেন জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) স্বেচ্ছাসেবীরা।
জনসাধারণের কাছে তথ্য পৌঁছাতে রিকশার মাধ্যমে তথ্য বিতরণ ও আইওএমের ইন্টারঅ্যাকটিভ ভয়েস রেসপন্স সিস্টেমের মতো তথ্যপ্রবাহের উদ্যোগগুলো ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে। কিন্তু যেখানে রাস্তা এবং মোবাইল নেটওয়ার্ক নেই, সেখানে এসব পদ্ধতিরও সীমাবদ্ধতা রয়েছে।
প্রয়োজনীয় বার্তাপ্রবাহ নিশ্চিত করতে এবং জীবনরক্ষাকারী তথ্যপ্রাপ্তি থেকে একজনও যেন বাদ না পড়ে, সে জন্য কক্সবাজারে আইওএমের মেন্টাল হেলথ এবং সাইকোসোশ্যাল সাপোর্ট (এমএইচপিএসএস) ইউনিট সাইকেলে করে রোহিঙ্গা জনবসতিজুড়ে তথ্য সরবরাহের কাজ শুরু করেছে।
সাইক্লিংয়ের সংস্কৃতিকে উৎসাহিত করার জন্য ‘২০৩০ এজেন্ডা’ এবং জাতিসংঘের 'সবুজ পুনরুদ্ধার' সুপারিশগুলোর সঙ্গে সংগতি রেখেই আইওএমের রোহিঙ্গা স্বেচ্ছাসেবকরা সাইকেলে ক্যাম্পগুলোতে বার্তা বিতরণে কাজে করছেন।
সাইকেল আরোহী স্বেচ্ছাসেবকরা মেগাফোনের মাধ্যমে রেকর্ডকৃত বার্তাগুলো ক্যাম্পের প্রতিটি এলাকায় পৌঁছে দিচ্ছেন।
রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জন্য রোহিঙ্গা স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে এ কার্যক্রম পরিচালিত হয় এবং এরই মধ্যে ক্যাম্পের ৬৭ হাজার সুবিধাভোগীর কাছে এসব বার্তা পৌঁছে গেছে। কোভিড-১৯ আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় বার্তা বিতরণের কাজেও গতি বাড়ানো হয়েছে। গত ১০ জুন পর্যন্ত রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ৩৭ শরণার্থী কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছে।
এতে অংশ নেওয়া রোহিঙ্গা সাইকেল আরোহী স্বেচ্ছাসেবক মোহাম্মদ হাসান বলেন, 'এ রকম গুরুত্বপূর্ণ সময়ে আমার ক্যাম্প এলাকার জনগোষ্ঠীর জন্য কাজ করতে পেরে আমি খুব খুশি।'
আইএমওর সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কোভিড-১৯ সম্পর্কিত তথ্য থেকে শুরু করে সাধারণ মানসিক স্বাস্থ্য এবং মনস্তাত্ত্বিক সহায়তা সম্পর্কিত তথ্য বিতরণকৃত বার্তার বিষয়বস্তুতে থাকে। বেঙ্গল ক্রিয়েটিভ মিডিয়া এবং ট্রান্সলেটরস উইদাউট বর্ডার্সের অনুবাদকদের সহায়তায় বাংলা, ইংরেজি এবং রোহিঙ্গা ভাষায় এসব বার্তা রেকর্ড করা হয়। বার্তাগুলো ইউএসবি ড্রাইভে সংরক্ষিত থাকে, যাতে বিভিন্ন পরিস্থিতির সঙ্গে তথ্য বিতরণ সহজেই অভিযোজিত হতে পারে এবং ক্যাম্পের যেখানে যানবাহন চলাচলে সীমাবদ্ধতা রয়েছে, সেখানেও যেন তথ্য সহজেই বিতরণ করা যায়। রিকশার মাধ্যমে তথ্যপ্রবাহের পদ্ধতির মতোই সাইকেলের মাধ্যমে বিকল্প যোগাযোগ পদ্ধতিটি পরিবেশবান্ধব এবং স্বেচ্ছাসেবক-উপকারভোগীদের স্বাস্থ্য ও জীবিকাতে অবদান রাখে। এ উদ্যোগ অর্থনৈতিকভাবেও সাশ্রয়ী।
আইওএম কক্সবাজারের এমএইচপিএসএস ক্যাপাসিটি বিল্ডিং লিয়াজোঁ অফিসার কেনি রসুল বলেন, 'বৈশ্বিকভাবে আমরা অভূতপূর্ব একটি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছি। ক্যাম্পে কোভিড-১৯ আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নিত্যনতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছি, যা আমাদের একটি জটিল পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যাচ্ছে। ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীর সহায়তা করার জন্য এবং একজনও যাতে পেছনে পড়ে না থাকে, সে জন্য আইওএম এখানে টেকসই পদ্ধতি অবলম্বনের মাধ্যমে বিরামহীনভাবে কাজ করছে।'