‘ওঠ, তোর আব্বুকে ডাকাতরা মেরে ফেলেছে’
কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলার চণ্ডীবের গ্রামে নিজ বাড়ি থেকে মাহবুবুর রহমান (৩৮) নামের এক রেলওয়ে কর্মচারীর রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ সময় ছুরিকাঘাতে আহত তাঁর স্ত্রী রোকসানা বেগমকেও (৩০) উদ্ধার করা হয়। তাঁকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
গতকাল বুধবার দিবাগত রাত ৩টা থেকে ৪টার মধ্যে এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
নিহত মাহবুবুর রহমান বাংলাদেশ রেলওয়ের লোকোশেডের মেকানিক পদে চাকরি করতেন। তিনি রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে লোকোশেডে কর্মরত ছিলেন। গতকাল বুধবার রাত ১০টার দিকে কাজ শেষে বাড়িতে ফেরেন তিনি। তাঁদের তিন সন্তান রয়েছে।
মাহবুবুর রহমানের স্ত্রী আহত রোকসানা বেগম জানান, গতকাল দিবাগত রাতে চার থেকে পাঁচজনের ডাকাত দল বাড়িতে হানা দিয়ে তাঁর স্বামী ও তাঁকে ছুরিকাঘাতে আহত করে। এ সময় ৫০ হাজার টাকাসহ চার থেকে পাঁচ ভরি স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নেয় তারা।
নিহতের বড় ছেলে চতুর্থ শ্রেণি পড়ুয়া আজিজুল হক জানায়, সে পাশের রুমে ছোট ভাইকে নিয়ে ঘুমিয়ে ছিল। এ সময় তাকে ডেকে তার মা আর্তনাদ করে বলেন, ‘ওঠ, তোর আব্বুকে ডাকাতরা মেরে ফেলেছে।’ পরে সে অন্য রুমে গিয়ে তার বাবার লাশ দেখতে পায়।
এদিকে, ভৈরব বাজারে বসবাসকারী নিহত মাহবুবুরের ছোট বোন মাহমুদা হক জানান, বাড়ির প্রধান গেট ও বারান্দার গ্রিল মজবুত লোহা দিয়ে তৈরি। রুমের দরজায় শক্ত লোহার তালা ভেঙে বাইরে থেকে কেউ ঢুকলে শব্দ হতো এবং প্রতিবেশীরা সেই শব্দ শুনতেন। এমনকি পাশের রুমে ঘুমিয়ে থাকা তাঁর সন্তানরাও কোনো শব্দ শুনতে পায়নি। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মাহমুদা হক।
প্রতিবেশী আবদুল হান্নান জানান, তাঁরা কোনো হট্টগোল বা কান্নাকাটির শব্দ শুনতে পাননি।
খবর পেয়ে পুলিশসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। ঘটনা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে জানিয়ে ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহীন জানিয়েছেন, এখনো বলা যাচ্ছে না, এটি ডাকাতি নাকি পরিকল্পিত খুনের ঘটনা।