এফআর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ড, এক বছরেও শেষ হয়নি তদন্ত
বনানীর এফআর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় এক বছরেও শেষ হয়নি তদন্ত।
২০১৯ সালের ২৮ মার্চ এফআর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ওই বছরের ৩০ মার্চ বনানী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) মিল্টন দত্ত বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। এরপরে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটির এজাহার ও এফআইর (প্রাথমিক তথ্য বিবরণী) এলে বিচারক মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দেন। তদন্তের পরে এই পর্যন্ত ১১ বার সময় নিয়েছে তদন্ত সংস্থা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
সর্বশেষ গত ১২ মার্চ মামলাটি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য ছিল। কিন্তু ওই দিন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (ডিবি পুলিশের পরিদর্শক) ফজলুল হক প্রতিবেদন দাখিল করতে না পারায় ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দেবদাস চন্দ্র অধিকারী আগামী ১৬ এপ্রিল প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পরবর্তী তারিখ ধার্য করেন।
নথি থেকে জানা যায়, ২০১৯ সালের ২৮ মার্চ বনানীর কামাল আতাতুর্ক এভিনিউর পাশের ১৭১ নম্বর সড়কে ফারুক রূপায়ন (এফআর) টাওয়ারে ভয়াবহ আগুনের ঘটনা ঘটে। এতে ঘটনাস্থলেই ২৫ জন এবং হাসপাতালে একজন মারা যান। ওই ঘটনায় আহত হন আরো ৭৩ জন। এ ছাড়া আহত হয়ে ফায়ারম্যান সোহেল রানা মারা যান।
মামলায় ওই ভবনের ১৯ থেকে ২৩ তলা পর্যন্ত বর্ধিত অংশের মালিক বিএনপি নেতা তাসভির উল ইসলাম, ভবন জমির মালিক প্রকৌশলী এসএমএইচআই ফারুক ও রূপায়ণ গ্রুপের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী খান ওরফে মুকুলকে আসামি করা হয়।
মামলা দায়েরের দিনই বারিধারার নিজ বাসা থেকে তাসভির উল ইসলাম ও বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে ভবন জমির মালিক প্রকৌশলী এস এম এইচ আই ফারুককে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন (৩১ মার্চ) প্রত্যেক আসামির সাত দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। রিমান্ড শেষে গত ৯ এপ্রিল তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক।
গ্রেপ্তারের ১১ দিনের মাথায় ১১ এপ্রিল জামিন পান তাসভির উল ইসলাম। আর এক মাস পাঁচ দিন কারাভোগের পর গত বছরের ৬ মে জামিন পান ফারুক। রূপায়ণ গ্রুপের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী খান ওরফে মুকুল গত বছর ২৩ জুন আত্মসমর্পণ করে জামিন পান।
এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ফজলুল হক এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমার আগে আরেক তদন্ত কর্মকর্তা তদন্ত করেছেন। এরপর আমি তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছি। তদন্ত চলছে। এখনো মৃত ব্যক্তিদের ময়নাতদন্ত শেষ হয়নি। আবার মামলার সাক্ষীও অনেক।’
এদিকে, এফআর টাওয়ারের নকশা অনুমোদনে এসএমএইচআই ফারুক হোসেন, লিয়াকত আলী খান মুকুল, তাসভির উল ইসলাম এবং রাজউকের সংশ্লিষ্ট ইমারত পরিদর্শকসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
পরে নকশা জালিয়াতির মাধ্যমে অবৈধভাবে ১৬ থেকে ২৩ তলা ভবন নির্মাণের অভিযোগে এফআর টাওয়ারের মালিক, রাজউকের সাবেক দুই চেয়ারম্যান এবং রূপায়ণ গ্রুপের চেয়ারম্যানসহ ২৫ জনের বিরুদ্ধে গত বছরের ২৫ জুন পৃথক দুটি মামলা দায়ের করে দুদক।
এরপর গত ২৯ অক্টোবর ফারুক, লিয়াকত আলী খান মুকুল, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান হুমায়ূন খাদেম, সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মো. সাইদুর রহমান ও সাবেক অথরাইজড অফিসার সৈয়দ মকবুল আহমেদের অভিযোগপত্র দেন তদন্ত কর্মকর্তা।