দুপুর ১২টা। হাসপাতাল থেকে এনটিভি কার্যালয়ে এসে পৌঁছে সাংবাদিক মো. মোমেনুর ইসলাম মণ্ডল স্বপনের লাশবাহী গাড়িটি। তখন আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন অপেক্ষয় থাকা সহকর্মীরা। শোকে নিস্তবদ্ধতা নেমে আসে এনটিভি কার্যালয়ে। এরপর দুপুর সোয়া ১২টার দিকে তাঁর প্রথম জানাজা সম্পন্ন হয়। জানাজার পর তাঁকে শেষবারের মতো বিদায় জানান তাঁর অশ্রুসিক্ত সহকর্মীরা।

সাংবাদিক মো. মোমেনুর ইসলাম মণ্ডল স্বপনের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন এনটিভির চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোহাম্মদ মোসাদ্দেক আলী। একইসঙ্গে আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন তিনি।

জানাজায় এনটিভির পরিচালক নুরুদ্দীন আহমেদ, এনটিভি অনলাইনের সম্পাদক খন্দকার ফকরউদ্দীন আহমেদ ও তাঁর সহকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ মোমেনের স্বজনেরা জানাজায় অংশ নেন।

এনটিভি কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিক মোমেনুর ইসলামকে নেওয়ার পর তাঁর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন এনটিভির পরিচালক নুরুদ্দীন আহমেদ ও এনটিভি অনলাইনের সম্পাদক খন্দকার ফকরউদ্দীন আহমেদ। ছবি : মোহাম্মদ ইব্রাহিম

এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে স্ট্রোক করেন মোমেনুর ইসলাম। প্রথমে তাঁকে রাজধানীর একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে বিকেল পৌনে ৫টার দিকে তাঁকে রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্সেস ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর মধ্যেই আজ শুক্রবার সকাল ৭টা ১০ মিনিটে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।

মোমেনুর ইসলামের মৃত্যুর খবর শুনে তাঁর সহকর্মীরা হাসপাতালে ছুটে যান। সেখানে মোমেনুরের স্ত্রীসহ স্বজনেরা উপস্থিত ছিলেন। তাঁর স্ত্রী ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে থাকেন। একবার দেখতে চান স্বামীকে।

জানাজা শেষে মোমেনুর ইসলামের মরদেহ লাশবাহী গাড়িতে তুলে দেন সহকর্মীরা। ছবি : মোহাম্মদ ইব্রাহিম

এরপর হাসপাতাল থেকে শেষবারের মতো মোমেনুর ইসলামকে তাঁর নিজ কর্মস্থল এনটিভি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। কার্যালয়ে জানাজা শেষে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তাঁর মরদেহ গ্রামের বাড়ি বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলার বেড়িনজো গ্রামের উদ্দেশে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় তাঁকে চোখের জলে বিদায় জানান সহকর্মীরা। দুপচাঁচিয়ার বেড়িনজো গ্রামে দ্বিতীয় জানাজা শেষে মোমেনুরের দাফনকাজ সম্পন্ন হবে।

সাংবাদিক মোমেনুরের বয়স হয়েছিল ৪৫ বছর। তিনি এনটিভি অনলাইনে সিনিয়র নিউজরুম এডিটর হিসেবে ২০১৯ সাল থেকে কর্মরত ছিলেন। সাংবাদিকতা ছাড়াও তিনি গান ও নাটক লিখতেন। এ ছাড়া আঁকতেন ছবিও। তিনি মা-বাবা, স্ত্রী ও দুই ছেলে সন্তান রেখে গেছেন।

মোমেনুর ইসলামের নিকটাত্মীয়রা জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার স্ট্রোক করেছিলেন মোমেনুর। এরপর বিকেল পৌনে ৫টার দিকে তাঁকে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্সেস ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর তাঁকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) নেওয়া হয়। পরে আজ শুক্রবার সকালে চিকিৎসকেরা জানান, তিনি মারা গেছেন।