একই ক্লাসের ১৯ শিক্ষার্থীসহ ‘হোম কোয়ারেন্টিনে’ ৭০ জন
আইসোলেশনে থাকা ইতালি প্রবাসীর সন্তানের সঙ্গে লেখাপড়া করা একই শ্রেণির ১৯ শিক্ষার্থীকে মাদারীপুরের শিবচর উপজেলায় ‘হোম কোয়ারেন্টিনে’ পাঠানো হয়েছে। ওই শিক্ষার্থীসহ শিবচরেই হোম কোয়ারেন্টিনে রয়েছে ৭০ জন। জেলায় মোট ‘হোম কোয়ারেন্টিনে’ রয়েছে ১২৯ জন।
প্রশাসন, স্বাস্থ্য বিভাগসহ স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা যায়, এক সপ্তাহ আগে ইতালি থেকে শিবচর পৌর এলাকার এক প্রবাসী দেশে আসে। দেশে আসার পর জ্বর-কাশি অনুভব করলে তিনি শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যান। পরে চিকিৎসকদের পরামর্শে ঢাকায় আইইডিসিআর এ পাঠানো হয় তাঁকে।
আইইডিসিআরের পক্ষ থেকে গত রোববার সকালে শিবচরে এসে অ্যাম্বুলেন্সে করে তাঁর স্ত্রী ও সন্তানকে ঢাকায় আইসোলেশনে নিয়ে যাওয়া হয়। গত সোমবার ওই প্রবাসীর শাশুড়িকেও ঢাকায় আইসোলেশনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য বিভাগের পরামর্শে ওই ইতালি প্রবাসীর শিশু কন্যার সহপাঠী একই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১৯ জন শিক্ষার্থীকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। স্কুলটির প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে আইইডিসিআর এর কর্মকর্তারা ও চিকিৎসকরা এদিন হাসপাতালে আলোচনা করেছে বলে জানা গেছে।
এ ছাড়া গত কয়েকদিনে করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে সারা জেলায় হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার পর ১৩৮ জনকে মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে।
মাদারীপুর স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে মাদারীপর সদর হাসপাতালের নতুন ভবনে একশ শয্যা প্রস্তুত করা হয়েছে। এ ছাড়া সদর হাসপাতালের পুরাতন ভবনের দুটি কেবিনের চার বেড প্রস্তুত করা হয়েছে। চারটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে দুটি করে বেড প্রস্তুত রাখা হয়েছে। করোনাভাইরাস মোকাবেলার জন্যে সচেতনামূলক লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে। এ ছাড়া যেকোনো সভা সেমিনার না করার নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন।
বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে ইতালি প্রবাসীর সন্তানের সঙ্গে লেখাপড়া করা ১৯ শিক্ষার্থীকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখার পরামর্শ দিয়েছে। তাঁরা আমাকে হাসপাতালে ডেকে পাঠিয়েছিল।’
হাসপাতালে গেলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শশাঙ্ক কুমার ঘোষ বলেন, ‘আইইডিসিআর কর্মকর্তারা মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলবেন না।’
শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএরও) মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘যেহেতু ইতালি প্রবাসী শিবচরে বেশি। তাঁই ঝুঁকি বেশি। হোম কোয়ারেন্টিনে যারা মানবেন না তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মাদারীপুর সিভিল সার্জন মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘মাদারীপুর জেলায় ১২৯ জনকে করোনাভাইরাস আক্রান্তের সন্দেহে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। এর মধ্যে শিবচরের ১৯ শিক্ষার্থী রয়েছে। এদের মধ্যে যারা হোম কোয়ারেন্টিনে না থেকে নির্দেশ অমান্য করবে, তাদের ব্যাপারে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রতিটি উপজেলায় উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে নির্দেশ মতো কাজ করছে।’