এএসপি পরিচয়ে ‘ভুয়া’ বিয়ে : ধর্ষণ মামলায় ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিচয়ের সূত্র ধরে ভুয়া পরিচয়ে এক নারীকে বিয়ে ও প্রতারণার মাধ্যমে তাঁর অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে এক ছাত্রলীগ নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গতকাল সোমবার সকালে দুই সন্তানের জননী বিধবা ওই নারী থানায় মামলা করলে পুলিশ ওই ছাত্রলীগ নেতাকে গ্রেপ্তার করে। পরে আদালতের মাধ্যমে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়।
অভিযুক্ত ওই ছাত্রলীগ নেতার নাম মো. আকিবুল ইসলাম। তাঁর বাড়ি আনোয়ারা উপজেলার হাইলধর ইউনিয়নে। তিনি চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বলে জানা গেছে।
৩৫ বছর বয়সী ওই নারীকে বিয়ের সময় কাবিননামায় আকিবুল ইসলাম নিজের নাম লিখেছেন তাহসান খান আকিব। বাবার নাম লিখেছেন মো. আশরাফ খান এবং বাড়ির ঠিকানা হিসেবে ব্যবহার করেছেন খান ম্যানশন, ৩১৪/১৯, জামালখান, চট্টগ্রাম। তারা চান্দগাঁও কাজী অফিসে গিয়ে ২০১৯ সালের আগস্টে বিয়ে করেন।
ভুক্তভোগী ওই নারীর বাড়িও আনোয়ারা উপজেলায়। কয়েক বছর আগে ওই নারীর স্বামী মারা যান। স্বামী মারা যাওয়ার পর দুই সন্তান নিয়ে বাকলিয়া এলাকায় থাকতেন ওই নারী।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী ওই নারীর সঙ্গে ফেসবুকে পরিচয় হয় আকিবুল ইসলামের। আকিবুল ইসলাম নিজেকে ওই নারীর কাছে সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) পরিচয় দেন। ওই নারী আকিবুল ইসলামের সঙ্গে দেখা করলে তাদের অন্তরঙ্গ ছবি তুলে রাখেন আকিবুল ইসলাম। পরে ব্ল্যাকমেইল করে ভুয়া নাম-ঠিকানা ব্যবহার করে ওই নারীকে বিয়ে করেন। স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে ওই নারীর বাসায় যেতেন আকিবুল ইসলাম।
মোটরসাইকেল ক্রয়, আইফোন ক্রয় ও বিভিন্ন প্রয়োজন জানিয়ে ওই নারীর কাছ থেকে কয়েক দফায় টাকা নেন আকিবুল ইসলাম। ফেসবুকে আরো কয়েকজন নারীর কাছ থেকে একই কায়দায় টাকা হাতিয়ে নেন তিনি। বিষয়টি বুঝতে পেরে এক সময় ওই নারী আকিবুল ইসলামকে টাকা দেওয়া বন্ধ করে দেন। ডিসেম্বরের ২৫ তারিখ থেকে আকিবুল ইসলাম ওই নারীর বাসায় যাওয়া বন্ধ করে দেন। পরে ওই নারী বাকলিয়া থানায় ধর্ষণ ও প্রতারণার মামলা দায়ের করেন।
বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নেজাম উদ্দিন বলেন, ফেসবুকে পরিচয়ের সূত্র ধরে ভুয়া পরিচয়ে এক নারীকে বিয়ে ও প্রতারণার মাধ্যমে তাঁর অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে আকিবুল ইসলাম নামের একজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছেন ভুক্তভোগী ওই নারী। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আকিবুল ইসলামেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি বোরহান উদ্দিন বলেন, আকিবুল ইসলামের বিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগকে জানানো হয়েছে। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ তাঁর বিরুদ্ধে শিগগিরই ব্যবস্থা নেবে। আকিবুল ইসলামের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের কমিটি থেকে তাঁকে বাদ দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছিল।