এই সময়ে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির যৌক্তিকতা নেই : ড. মঈন খান
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেছেন, ‘পেঁয়াজ, লবণ, চালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম কেন বেড়েছে তার জবাবদিহি সরকারকে করতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘এই সময়ে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কোনো যৌক্তিকতা নেই।’
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর নয়াপল্টনে আয়োজিত গরিব ও দুস্থদের মধ্যে ত্রাণসামগ্রী বিতরণের সময় এসব কথা বলেন ড. মঈন খান। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে গরিব ও দুস্থদের মাঝে পেঁয়াজ, চাল ও শীতবস্ত্র বিতরণ করে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক দল। এ সময় শতাধিক গরিব মানুষের মধ্যে ওই ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়।
ড. মঈন খান বলেন, ‘এই যে বর্ধিত মূল্যের জন্য সাধারণ দরিদ্র মানুষের পকেট থেকে শত শত কোটি টাকা লুট করা হয়েছে, এত লুটের টাকা কার পকেটে গেছে- তার জবাব সরকারকে দিতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘সরকারের কোষাগার এখন শূন্য। তারা পাগল হয়ে গেছে। তারা এখন হন্যে হয়ে ছুটছে কোথা থেকে টাকা সংগ্রহ করা যায়? তারা মরিয়া হয়ে ট্যাক্স সংগ্রহ করেছে। তারা সাধারণ গরিব মানুষ ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর উপর হাজার হাজার টাকা ভ্যাট আরোপ করেছে। কারণ এই সরকার খাজাঞ্চি খানা লোপাট করেছে মেগা প্রজেক্টে মেগা দুর্নীতির মাধ্যমে।’
মঈন খান বলেন, ‘এই যে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির নামে হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট হচ্ছে, সে অর্থ তো সরকারের খাজাঞ্চি খানায় যায় না। সে অর্থ যায় সরকারের আশীর্বাদপুষ্ট কয়েকজনের পকেটে। সাধারণ মানুষ তাদের রক্ত পানি করা অর্থ কেন গুটিকয়েক মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়নে দেবে? এই প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। আজকে বাংলাদেশে উন্নয়নের নামে চলছে লোপাট। গুটিকয়েক ধনবান ব্যক্তি আরো ধনশালী হচ্ছে। বিত্তবান থেকে বিত্তবান হচ্ছে। আজকে দরিদ্র মানুষের অবস্থা চিন্তা করুন। ২৩০ টাকা কেজি দরে তাদের কি পেঁয়াজ কেনার সামর্থ্য আছে? ১০০ টাকায় লবণ কেনার সামর্থ্য আছে? এটাই কি বাংলাদেশের উন্নয়নের জোয়ারের লক্ষণ?’
সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের দরিদ্র ও শান্তিপ্রিয় মানুষ। শান্তিতে দুই বেলা খেয়ে বাঁচতে চাই। অথচ সরকার যদি সেটা না দেয় তাহলে দেশের মানুষ কোথায় যাবে? ধনীর প্রাসাদ দেখে তো গরিবের পেট ভরবে না। আসুন আমরা গণতন্ত্র কায়েম করি। কারণ এটা প্রমাণিত যে, দেশে যদি গণতন্ত্র না থাকে, জবাবদিহিতা না থাকে, সুশাসন-সুবিচার না থাকে তাহলে কোনো দেশ উন্নত হতে পারে না। আজকে বাংলাদেশে যে উন্নয়ন চলছে এটা হচ্ছে কসমেটিক উন্নয়ন। সত্যিকারার্থে দেশে কোনো উন্নয়ন নেই।’
ড. মঈন খান আরো বলেন, ‘আসুন আমরা দেশনেত্রী বেগম খালেদ জিয়াকে মুক্ত করে জনগণের কাতারে নিয়ে আসি। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে গ্রামে-গঞ্জে, হাটে বাজারে গিয়ে দরিদ্র মানুষের সেবা করব। আমাদের ক্ষমতার প্রয়োজন নেই। রাজনীতি করলে যে শুধু ক্ষমতায় যেতে হবে এই নীতিতে আমি বিশ্বাসী নই; কিন্তু যারা বিনা নির্বাচনে, বিনা ভোটে রাতের অন্ধকারে ক্ষমতা দখল করেছে তাদের ক্ষমতায় থাকার কোনো অধিকার নেই। আসুন সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের যোগ্য নেতৃত্বে দেশের মানুষের হাতে বহুদলীয় গণতন্ত্র তুলে দেই।’
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু, সিনিয়র সহসভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, সহসভাপতি গোলাম সারোয়ার, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির ভুইয়া জুয়েল, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, মহানগর উত্তরের সভাপতি ফখরুল ইসলাম রবিন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন নজরুল ইসলাম।