উচ্চশিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিত করতে ইউজিসিকে রাষ্ট্রপতির তাগিদ
দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার মান নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে (ইউজিসি) কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ।
রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, ‘ছাত্র ভর্তি থেকে শুরু করে শিক্ষক নিয়োগ, প্রশ্ন প্রণয়ন ও খাতা মূল্যায়ন, ক্যারিকুলাম প্রণয়ন ও টিউশন ফি নির্ধারণসহ সব বিষয়ে নিয়মনীতি মেনে চলতে হবে। ইউজিসিকে এ ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে। প্রয়োজনে ইউজিসি ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য, অভিভাবক ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করে সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করবে এবং উচ্চশিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিত করতে কঠোর পদক্ষেপ নেবে।’
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ফারইস্ট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির প্রথম সমাবর্তনে দেওয়া বক্তব্যে রাষ্ট্রপতি এসব কথা বলেন বলে বার্তা সংস্থা ইউএনবির এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
আবদুল হামিদ বলেন, প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় যাতে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ ছাড়া পরিচালিত হতে পারে এবং শিক্ষার্থীরা যাতে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে এসে প্রতারণার শিকার না হয় তা নিশ্চিত করতে ইউজিসি, শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
‘আমরা উচ্চশিক্ষার প্রসার চাই। তবে সার্টিফিকেটসর্বস্ব উচ্চশিক্ষা চাই না। তাই প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে,’ বলেন রাষ্ট্রপতি।
দেশে উচ্চশিক্ষার বিস্তারে বেসরকারি উদ্যোক্তাদের অবদানের প্রশংসা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য আবদুল হামিদ বলেন, ‘তবে বেসরকারি খাতে প্রতিষ্ঠিত বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় গুণগত মানসম্পন্ন শিক্ষার প্রসারে প্রশংসনীয় ভূমিকা রাখলেও সব বিশ্ববিদ্যালয় বা সব উদ্যোক্তাই যে নিয়মনীতি মেনে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করছেন, তা নয়।’
শিক্ষা খাতে বেসরকারি বিনিয়োগকে প্রশংসনীয় উদ্যোগ হিসেবে আখ্যায়িত করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘বৈশ্বিক চাহিদা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় হবে জ্ঞান অর্জন ও সম্প্রসারণের একটি উপযুক্ত কেন্দ্র। যেখানে শিক্ষার্থীরা লেখাপড়ার পাশাপাশি সংস্কৃতি ও ক্রীড়াসহ সমসাময়িক বিষয়ে জ্ঞানর্জনের সুযোগ পাবে। কিন্তু দেশের বেসরকারি অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ই আবদ্ধ বাণিজ্যিক ভবনে পরিচালিত হয় যা উন্মুক্ত জ্ঞানচর্চার পথে বড় অন্তরায়।’
‘আমাদের মনে রাখতে হবে শিক্ষা কোনো বাণিজ্যিক পণ্য নয়। যারা বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করবেন তাদের সব নিয়মনীতি মেনেই চালাতে হবে। বাণিজ্যিক মনোভাবাপন্ন উদ্যোক্তাদের জন্য আরও অনেক লাভজনক খাত রয়েছে। আপনারা সেসব খাতে বিনিয়োগ করে নিজেরা লাভবান হতে পারেন আবার দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নেও অবদান রাখতে পারেন’, যোগ করেন রাষ্ট্রপতি।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউজিসি চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. কাজী শহীদুল্লাহ ও শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। সমাবর্তন বক্তা ছিলেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন।
রাষ্ট্রপতির সংশ্লিষ্ট সচিবরাও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।