ইরফান সেলিম ডিবিতে, জিজ্ঞাসাবাদ চলছে
নৌবাহিনীর লেফটেন্যান্ট মো. ওয়াসিফ আহমদ খানকে মারধর ও হত্যাচেষ্টার মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বহিষ্কৃত কাউন্সিলর মোহাম্মদ ইরফান সেলিম ও তাঁর সহযোগী মো. জাহিদুল মোল্লাকে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের গোয়েন্দা শাখায় (ডিবি) নিয়ে আসা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে এনটিভি অনলাইনকে এই তথ্য জানিয়েছেন ডিবি পুলিশের রমনা শাখার উপকমিশনার (ডিসি) এইচ এম আজিমুল হক। তিনি বলেন, ‘ইরফান ও জাহিদুলকে তিন দিনের রিমান্ডে নিয়ে কেন নৌবাহিনীর কর্মকর্তাকে মারধরের মতো ঘটনা ঘটল, কেন তাঁকে হত্যাচেষ্টা ও হুমকি দেওয়া হলো- তা জানতে বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’
ডিএমপির ডিসি আরো বলেন, ‘এ ছাড়া র্যাবের অভিযানে অবৈধ বিদেশি অস্ত্র ও ওয়াকিটকি পাওয়া গেছে। এসব অস্ত্র ও ওয়াকিটকির বিষয়ে যে অভিযোগগুলো আছে তা খতিয়ে দেখছি আমরা। এরইমধ্যে তাঁদের এসব ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বিস্তারিত জানা যাবে।’
ঢাকা দক্ষিণ সিটির ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের বহিষ্কৃত কাউন্সিলর ইরফান সেলিম ও তার সহযোগী জাহিদুল মোল্লাকে কড়া পুলিশ পাহারায় আজ দুপুরের দিকে ধানমণ্ডি থানা থেকে মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে আনা হয়। গতকাল বুধবার এ দুজনের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আসাদুজ্জামান নূর রিমান্ডের আদেশ মঞ্জুর করেন।
গত রোববার রাতে নৌবাহিনীর লেফটেন্যান্ট ওয়াসিফ আহমদ খানকে মারধর ও হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। পরদিন সোমবার সকালে জাতীয় সংসদের সদস্য হাজী সেলিমের ছেলে ইরফান সেলিম, এ বি সিদ্দিক দিপু, মো. জাহিদ ও মিজানুর রহমানের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরো দু-তিনজনকে আসামি করে ধানমণ্ডি থানায় হত্যাচেষ্টার মামলা করেন ওয়াসিফ আহমদ খান।
ওইদিন দুপুর থেকে র্যাব সদস্যরা রাজধানীর চকবাজারের ২৬ দেবীদাস ঘাট লেনে ‘চাঁন সরদার দাদা বাড়ী’-তে অভিযান চালায়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম। অভিযান শেষে অবৈধ ওয়াকিটকি ও মাদক রাখার দায়ে ইরফান সেলিম ও তাঁর দেহরক্ষী মো. জাহিদকে এক বছর করে কারাদণ্ডাদেশ দেন র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। এরপর রাতে দুজনকে কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।
সন্ধ্যায় র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার প্রধান লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ সাংবাদিকদের জানান, ইরফান সেলিমের বাড়ি থেকে লাইসেন্সবিহীন বিদেশি অস্ত্র, একটি একনলা বন্দুক, একটি ব্রিফকেস, মদ ও ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া দেহরক্ষী মো. জাহিদের কাছ থেকে ৪০০ ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে এবং বিভিন্ন ধরনের ৩৮ থেকে ৪০টি ওয়াকিটকি উদ্ধার করা হয়েছে। যেগুলো আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বাহিনী ব্যবহার করে থাকে।
আশিক বিল্লাহ আরো বলেন, ‘আমরা তাঁদের কাছ থেকে গুলি, হাতকড়া, একটি ড্রোন এবং কন্ট্রোল রুম থেকে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন তিনটি ভেরি হাই সিকিউরিটি সেট (ভিএইচএস) উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছি। এটা ওয়াকিটকির একটি আধুনিক সংস্করণ। এ ছাড়া ওই বাসায় টর্চার সেলের সন্ধান পাওয়া গেছে। টর্চার সেলে হাড়, ছুরি, হকিস্টিক ও দড়ি পাওয়া যায়।’