আ.লীগের অধীনে আর কোনো নির্বাচন নয় : ড. মোশাররফ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, ‘এই সরকার তো অবৈধ। তাদের অধীনে নির্বাচন শুধু না, এখন বলতে হবে- এই সরকার আর নয়। আসুন সরকারকে বিদায় দিয়ে গণতন্ত্র ও জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় এক কাতারে হই। ভবিষ্যতে আলোচনার মাধ্যমে আমরা কর্মসূচি ঘোষণা করব।’
নাগরিক ঐক্য আয়োজিত ইফতার মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন। ‘এই সরকারের অধীনে নির্বাচনকে না বলুন’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও রাজনৈতিক দল এবং সংগঠনের নেতাদের সম্মানে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে নাগরিক ঐক্য।
আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘ফ্যাসিবাদের হাত থেকে রেহাই পেতে জাতীয় ঐক্য দরকার। আমরা বিশ্বাস করি সবাইকে একসঙ্গে পাব। ক্ষমতাসীনরা রাষ্ট্রটাকে তছনছ করছে। এটাকে বাঁচাতে হলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাতে হবে। এই সরকার নির্লজ্জ বিবস্ত্র। তাদেরকে বিতাড়িত করতে হবে।’
জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন, ‘এই সরকারের অধীনে কোনোভাবেই নির্বাচন করা যাবে না, আপনারা অবৈধ। ক্ষমতা ছেড়ে চলে যেতে হবে। ভোট চুরি করেছিলেন কেন? রাতের আগে ব্যালটবাক্স ভরাট করেছেন কেন? সেটার জবাব আগে দেন। অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে হবে। আন্দোলনের মুখে এই সরকার ৫ মিনিটও টিকবে না।’
রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. দিলারা চৌধুরী বলেন, ‘দেশ সত্যিই ভীষণ বিপদের মুখে। সবাই ঐক্যবদ্ধ না হলে আরও ভয়াবহ হবে। তবুও সংঘবদ্ধভাবে এগিয়ে যেতে হবে। জনগণের সামনে নির্দিষ্ট লক্ষ্য তুলে ধরে সরকারকে বদলিয়ে পরবর্তী সরকার প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানাতে হবে। জাতীয় সরকারের রূপরেখা ঠিক করতে হবে। সেটা কী নির্বাচনের আগে না কি পরে হবে?’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নূরুল আমিন ব্যাপারী বলেন, ‘দেশে যখন নির্বাহী বিভাগ ও আইন বিভাগ ঠিকমতো কাজ করে না, তখন দেশ অকার্যকর হয়ে পড়ে। এই সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়। তারা এমন বিপদে পড়বে যে আমরা সকলেই বিপদে পড়ে যাব। আমাদের সবাইকে সঙ্গে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন করতে হবে। বেশিদিন লাগবে না। অল্প কিছুদিন আন্দোলন করলে সরকারের পতন হবে।’
এলডিপির কেন্দ্রীয় নেতা ড. রেদোয়ান আহমেদ বলেন, ‘হাসিনা সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন দেশের কেউ চায় না। আমরা বিএনপির আমলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিল পাস করেছিলাম। কিন্তু এই সরকার তা বাতিল করেছে। আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানাই। আজকে জাতীয় সরকারের ফর্মুলা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বা তার দোসরদের নিয়ে জাতীয় সরকার হতে পারে না। কাঁদা ছোড়াছুড়ি বাদ দিয়ে, আলোচনার মাধ্যমে নির্ধারণ হবে জাতীয় সরকারের ফর্মূলা কী হবে?’
ভাসানী অনুসারী পরিষদের সভাপতি বলেন, ‘আলাপ আলোচনা করে নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা নির্ধারণ করতে হবে। দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে আমরা দেশকে মুক্ত করতে পারব না। বিগত ৫০ বছর ধরে যেভাবে লুট হচ্ছে সেভাবে থেকে যাবে। সবাইকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এই সরকারকে হটিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘২০১৪ বা ২০১৮ সালের মতো আগামীতে আরেকটি ব্যর্থ নির্বাচনের দায় দেশের মানুষ বহন করতে পারবে না। আরেকটি ব্যর্থ নির্বাচন হলে দেশের পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে তা বলা কঠিন! মানুষ আজ ফ্যাসিবাদের পরিবর্তন চায়। এটার দায়িত্ব রাজনীতিকদের। না করলে কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে।’
এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, ‘শুধু আওয়ামী লীগ সরকার না, জাতীয় সরকারের অধীনেও নির্বাচন করা যাবে না। তীব্র আন্দোলনের মুখে এই সরকারকে হটিয়ে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। এর বাইরে কেউ অন্য কিছু চিন্তা করলে বুঝতে হবে, সেই চিন্তার সাথে শেখ হাসিনার চিন্তার মিল আছে।’