আর দেশে ফিরবেন না সাতকানিয়ার মিজান
পরিবারকে অর্থনৈতিক সাবলম্বী করতে আফ্রিকার দেশ মোজাম্বিকে পাড়ি জমিয়েছিলেন দক্ষিণ চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার বাসিন্দা মিজানুর রহমান (২৫)। নিজের হাড়ভাঙা পরিশ্রমে অর্জিত অর্থ দেশে পাঠিয়ে পরিবারের সদস্যদের অর্থনৈতিক উন্নতি সাধন করলেও সেই উন্নতি নিজ চোখে দেখার জন্য দেশে আসতে পারেনি তিনি।
মোজাম্বিকে নিজ বাসায় সন্ত্রাসীদের হাতে নির্মমভাবে খুন হন মিজান। মিজান সাতকানিয়া উপজেলার ঢেমশা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মাইজপাড়া এলাকার নুরুচ্ছফা সওদাগরের ছেলে।
স্থানীয় মানুষের কাছে অত্যন্ত প্রিয় মিজানকে হারিয়ে পরিবারের সদস্যদের পাশপাশি পুরো এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
আজ সোমবার বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭টার দিকে মোজাম্বিকেই তাঁর দাফন করা হয়। মোজাম্বিকে অবস্থানরত সাতকানিয়ার বাসিন্দা মহিবুল্লাহ, জাহেদ, জাগির হোসেন, হেমায়েত উল্লাহ ও বাঁশখালীর সাজ্জাদের বরাত দিয়ে মিজানের বড় ভাই ব্যবসায়ী নাজিম উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মিজানের বড় ভাই নাজিম উদ্দিন জানান, ২০১৪ সালের শেষের দিকে মিজান মোজাম্বিকে যান। সেখানে গিয়ে ক্ষুদ্র পরিসরে রড-সিমেন্টের ব্যবসা করে মোজাম্বিক নামপুলা প্রবিঞ্চ মোমা ডিস্ট্রিকে বাসা নিয়ে বসবাস করতেন। ঘটনার সময় তিনি নিজ বাসায় অবস্থানকালে একদল বন্দুকধারী সন্ত্রাসী তাঁর রুমে ঢুকে শ্বাসরোধ করে নির্মমভাবে হত্যা করে। বাসায় রাখা নগদ টাকা ও মালামাল লুট করে নিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। পরে খবর পেয়ে স্থানীয় প্রবাসী বাংলাদেশিরা ঘটনাস্থলে এসে বিষয়টি পুলিশকে জানায়। পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
নাজিম জানান, গত শনিবার বাংলাদেশ সময় রাত আনুমানিক ৯টার দিকে দেশে তাঁর ছোট বোন তসলিমার সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। তিনি আগামী ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে দেশে আসার কথা জানান। এর মাত্র একদিনের মাথায় তাঁর মৃত্যুর খবর শুনে পাগল প্রায় পরিবারের সদস্যরা।
ঢেমশা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আবুল কালাম জানান, মিজান ছিল অত্যন্ত ভালো ছেলে। তিনি দেশে অবস্থানকালে কোনোদিন কারো সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেননি। তাই তিনি ছিলেন সবার প্রিয়। তাঁর লাশ মোজাম্বিকে দাফন করা হয়েছে।