আবারও কর্মহীনদের জন্য কক্সবাজারে সেনা বাজারের আয়োজন
কক্সবাজারে করোনাভাইরাসের কারণে কর্মহীন অসহায় মানুষদের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী ও কাঁচাবাজারের চাহিদা পূরণ করতে আবারও সেনাবাজারের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১০ পদাতিক ডিভিশন। আজ শনিবার সকালে জেলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এই সেনাবাজারের আয়োজন করা হয়।
এর আগে গত ২২ মে কক্সবাজার জেলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ঈদের আগে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী যেমন চাল, আটা, তেল, লবণ, ডাল এবং বিভিন্ন ধরনের সবজি সংবলিত সেনাবাজারের আয়োজন করা হয়।
আগের মতো এবারও গ্রামের প্রান্তিক কৃষকদের কাছ থেকে সবজি সংগ্রহ করে বাজারে নিয়ে এসে ৫০০ পরিবারের মধ্যে বিনামূল্যে এ বাজার সুবিধা দেওয়া হয়। ১০ আর্টিলারি ব্রিগেডের তত্ত্বাবধানে আয়োজিত এই বাজার কার্যক্রম পরিদর্শন করেন রামু সেনানিবাসের ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ওমর সাদী, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) ফোরকান আহমদ, সেনাবাহিনীর রামু ডিভিশনের কর্নেল ফারুক, মেজর তানজিলসহ জেলা প্রশাসনের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা।
সেনানিবাস সূত্রে জানা যায়, আগে থেকেই জেলার ঝাউতলা, সমিতি পাড়া, বার্মিজ মার্কেট ও কলাতলী এলাকা থেকে সেনাসদস্যরা হতদরিদ্র মানুষদের তালিকা তৈরি করে বিশেষ টোকেন প্রদান করে। স্টেডিয়ামে প্রবেশপথে সেনাসদস্যদের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিল জীবাণুনাশক বুথ ও হাত ধোয়ার ব্যবস্থা। হতদরিদ্র মানুষগুলোকে সহায়তা পেয়ে উচ্ছসিত হতে দেখা যায়। ঈদের আগে ও পরে এ ধরনের মানবিক সহায়তার জন্য তারা সেনাবাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। পর্যায়ক্রমে জেলার অন্য এলাকাতেও এ ধরনের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়।
বাজার করতে আসা বার্মিজ মার্কেটের কর্মচারী বেলাল ও সুজন বলেন, ‘করোনার কারণে পর্যটক শূন্য কক্সবাজারে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এবং সব ধরনের কাজ বন্ধ থাকায় আমরা অত্যন্ত কষ্টের মধ্যে আছি। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে চাল, আটা, লবণ, তেল, আলু, বরবটি, কচুর লতি, কাঁচামরিচসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পেয়ে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। এর আগে সেনাবাহিনী কর্তৃক এ ধরনের বাজার পরিচালনার কথা শুনেছি। আজ নিজে বাজার থেকে সুবিধা গ্রহণ করতে পেরে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। সেনাবাহিনীর এ ধরনের কার্যক্রম অবশ্যই প্রশংসার দাবি রাখে।’
কক্সবাজার জেলা ও চট্টগ্রাম জেলার চারটি উপজেলায় গত ২৪ মার্চ থেকেই মাঠে আছে সেনাবাহিনী। টহল কার্যক্রমসহ করোনার ভয়াবহতার ব্যাপারে মানুষকে সচেতন করার পাশাপাশি হ্যান্ড স্যানিটাইজার এবং মাস্ক বিতরণ করছেন তারা। পথচারীদের ফুল দিয়ে বুঝিয়ে শুনিয়ে তাদের ঘরে ফেরাতে সচেষ্ট হয়েছেন। এ ছাড়া নিজেদের রেশন বাঁচিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে চাল, ডাল, তেল, আলু, পেঁয়াজ ও সাবানসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন সামগ্রী কর্মহীন অসহায় পরিবারের মানুষগুলোর হাতে তুলে দিচ্ছেন। সেনা সদস্যরা কক্সবাজার জেলার প্রবেশদ্বার চকরিয়া এবং রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পের প্রবেশদ্বারে একাধিক ডিজইনফেকশন বুথের মাধ্যমে জরুরি সরবরাহ কাজে নিয়োজিত যানবাহনগুলোকে ও মানুষজনদের জীবাণুমুক্ত করছেন। তারা সর্বশেষ সুপার সাইক্লোন ‘ঘূর্ণিঝড় আম্পান’ উপদ্রুত এলাকাগুলোতে ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট ও বাঁধ পুনর্নির্মাণ এবং দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে জনসাধারণকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সহায়তা ও ত্রাণ প্রদানের মাধ্যমে বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা অব্যাহত রেখেছেন।