আন্দোলন, আন্দোলন ও আন্দোলনের বিকল্প নেই : মির্জা ফখরুল
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এই সরকারের আমলে আমাদের অসংখ্য নেতা প্রাণ হারিয়েছেন, গুম হয়েছেন, আমাদের বিরুদ্ধে অসংখ্য মামলা। তারপরেও বিএনপিকে দমিয়ে রাখতে পারেনি। বিএনপি আছে, চলছে এবং অত্যন্ত সোচ্চার হয়েই আছে। এর মধ্য দিয়েই এই দানবকে পরাজিত করে জনগণের প্রতিনিধিত্বমূলক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এর জন্য দরকার আন্দোলন, আন্দোলন এবং আন্দোলন। এর কোনো বিকল্প নেই।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের উদ্যোগে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪০তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল এসব বলেন।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, কখনো পিছু ফিরে তাকাবেন না। আর কখনো এই কথা মনে করবেন না- ‘আমরা পারব না’। আমরাই পারব এবং আমরা অবশ্যই জয়ী হব। যে দানব আমাদের অধিকারগুলো হরণ করে নিয়েছে, যে দানব লুণ্ঠনের মধ্য দিয়ে দেশের অর্থনীতিকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দিয়েছে, সেই দানবকে পরাজিত করতে হবে।
বিএনপিকে দাবিয়ে রাখা যাবে না উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এখনো কার্যত কারাগারে। আর তিনি কারাগারে বলেই গণতন্ত্র এখন কারাগারে, গণতন্ত্র বন্দি হয়ে আছে। এরপরও আমরা সমস্ত প্রতিকূলতাকে অতিক্রম করে হারিয়ে যাওয়া গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে পারব। গণতন্ত্রকে রক্ষা করার জন্য খালেদা জিয়ার আপসহীন মনোভাবকে পুঁজি করে এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে যে আন্দোলন-সংগ্রাম চলছে তাকে সফল করতে হবে। এর মাধ্যমেই আমরা খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে পারব এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করতে পারব।
প্রতিহিংসার কারণেই সরকার উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিদেশে যেতে দিচ্ছে না অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়া এখনো হাসপাতালে অসুস্থ অবস্থায় আছেন। এই সরকার প্রতিহিংসাপরায়ণ এবং তাদের পায়ের নিচে মাটি নেই। এজন্য খালেদা জিয়ার চিকিৎসকেরা উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে চাইলেও সরকার যেতে দিচ্ছে না। এটা হচ্ছে তাদের দুর্বলতা, তাদের রাজনীতির দেউলিয়াপনা। এই সরকার সম্পূর্ণভাবে গণবিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। তারা দুর্নীতিপরায়ন সরকারে পরিণত হয়েছে। এ সরকার অত্যাচারী শাসকে পরিণত হয়েছে, ফ্যাসিবাদী সরকারে পরিণত হয়েছে।
খালেদা জিয়ার নেতৃত্বের নানা দিক তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পরে সবাই ভেবেছিল যে বিএনপি শেষ হয়ে যাবে, বিএনপিকে আর দেখা যাবে না। কারণ আসল নেতাই চলে গেছেন। কিন্তু খালেদা জিয়া একজন গৃহবধূ হয়ে পতাকাকে তুলে ধরছেন। সেটা স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের পতাকা, গণতন্ত্রের পতাকা। যেটাকে ধারণ করে এদেশের মানুষ বেঁচে আছে। এখন অবধি খালেদা জিয়া দেশের সব রাজনীতিবিদদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ মহিয়সী নেত্রী। দেশের জন্য তাঁর অবদান কারো চেয়ে খাটো নয়।
এ সময়ে জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার বর্ণাঢ্য জীবন-কর্মের ওপর প্রয়াত সাংবাদিক মাহফুজউল্লাহর লেখা গ্রন্থ দুইটি সব নেতাকর্মীকে পড়ার পরামর্শ দেন বিএনপির মহাসচিব।
জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান ও সিনিয়র সহসভাপতি গোলাম সারোয়ারের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েলের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন নবী খান সোহেল, স্বেচ্ছাসেবক দলের বিথীকা বিনতে হোসাইন, ইয়াসীন আলীসহ কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য দেন।