আদালত পরিবর্তনে মিন্নির আবেদনের শুনানি ১৯ ফেব্রুয়ারি
আলোচিত বরগুনার রিফাত শরীফ হত্যা মামলার বিচারকার্যক্রম বরগুনা থেকে ঢাকার আদালতে পরিবর্তন করতে আসামি আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির আবেদনের শুনানির জন্য আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেছেন হাইকোর্ট।
আজ সোমবার রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি এস এম মজিবুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ দিন ধার্য করেন।
শুনানিতে মিন্নির পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকট জেড আই খান পান্না, অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এফ আর খান।
শুনানিকালে মিন্নির আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেন, ‘বিরতিহীনভাবে এই মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ করছেন বরগুনার আদালত।’
এ পর্যায়ে হাইকোর্ট বলেন, ‘এভাবে সাক্ষ্য নিতে বাধা আছে কি?’
আইনজীবী বলেন, ‘বাধা নেই। তবে একটি মামলার ক্ষেত্রে এত তাড়াহুড়া কেন? যদি দ্রুত নিষ্পত্তি করতে হয় তাহলে দেশের সব মামলার ক্ষেত্রেই তা হতে হবে।’
আদালত বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্ট থেকে এ বিষয়ে সার্কুলার জারি করা হয়েছে। সাক্ষী আদালতে হাজির হলে তাঁর বক্তব্য রেকর্ড করতে হবে।’
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এফ আর খান বলেন, ‘আবেদনকারী মিন্নি ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ পর্যায়ে আমি এখনো কোনো ডকুমেন্টস পাইনি। তাই আমার সময় প্রয়োজন।’
সময় আবেদনে আপত্তি জানান মিন্নির আইনজীবী।
তখন আদালত বলেন, ‘আমরা তো আপনার আবেদন শুনব।’ এরপর আদালত শুনানির জন্য আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেন।
গত ৯ ফেব্রুয়ারি বরগুনা থেকে ঢাকার আদালতে মামলার বদলি চেয়ে মিন্নি আবেদন করেন। বরগুনায় তাঁর জীবনের শঙ্কা থেকে এ আবেদন করা হয়েছে বলে জানানো হয়।
গত বছরের ২৬ জুন সকালে বরগুনা সরকারি কলেজ গেটের সামনে প্রকাশ্যে রিফাত শরীফকে কুপিয়ে জখম করে সন্ত্রাসীরা। তাঁকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজে নেওয়ার পর সেখানেই মারা যান।
গত ১ জানুয়ারি রিফাত হত্যা মামলার প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালত। এরপর ৮ জানুয়ারি অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন বরগুনার শিশু আদালত।
২০১৯ সালের ২৬ জুন বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে নিয়ে বরগুনা সরকারি কলেজ থেকে ফেরার পথে নয়ন বন্ড, রিফাত ফরাজীসহ একদল যুবক রিফাত শরীফের ওপর হামলা চালায়। তারা ধারালো দা দিয়ে রিফাত শরীফকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। এ সময় মিন্নি হামলাকারীদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন; কিন্তু তাদের থামানো যায়নি। খুনিরা রিফাত শরীফকে উপর্যুপরি কুপিয়ে রক্তাক্ত করে চলে যায়। পরে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রিফাতের মৃত্যু হয়।
এ হত্যার ঘটনায় রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ পরের দিন সকালে ১২ জনকে আসামি করে বরগুনা সদর থানায় মামলা করেন। মিন্নি ছিলেন সেই মামলার এক নম্বর সাক্ষী। পরে ১৬ জুলাই রাতে এ মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ। পরের দিন বরগুনার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতের বিচারক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম গাজী মিন্নির পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।