করোনাভাইরাসের পরিস্থিতিতে ৩১ মে থেকে সারা দেশের সরকারি অফিস, সীমিত করে গণপরিবহন খুলে দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

সুপ্রিম কোর্টসহ দেশের সব আদালত খুলবে কি না এ বিষয়ে সিদ্বান্ত নিতে আগামীকাল শনিবার ভিডিও কনফারেন্সে ফুলকোর্ট সভা ডেকেছেন প্রধান বিচারপতি।

গত ১১ মে থেকে সীমিত আকারে সারা দেশের আদালতে ভার্চুয়ালি পদ্ধতিতে শুনানি চলছিল। এসব আদালতে ৮ কার্যদিবসে প্রায় ২০ হাজার ৯৩৮ আসামির জামিন মঞ্জু করা হয়। নিষ্পত্তি করা হয় ৩৩ হাজার ২৮৭টি মামলা।

ফুলকোর্ট সভা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. আলী আকবর স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতিদের অংশগ্রহণে আগামীকাল শনিবার বিকেল ৩টায় ফুলকোর্ট সভা অনুষ্ঠিত হবে।

করোনাভাইরাসের কারণে গত ২৬ মার্চ থেকে সরকারি আদেশের সঙ্গে মিল রেখে আদালত অঙ্গনও বন্ধ রয়েছে। কেবল জরুরি প্রয়োজনে প্রত্যেক জেলায় একটি করে ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট খোলা। এ অবস্থায় সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতি এ এম আমিন উদ্দিন ও সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস কাজল স্বল্প পরিসরে কোর্ট চালু করতে প্রধান বিচারপতিকে অনুরোধ করেন।

এরই মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের ১৪ আইনজীবী সীমিত পরিসরে এক/দুটি বেঞ্চ কিংবা অনলাইনে কোর্ট খোলার জন্য প্রধান বিচারপতিকে চিঠি দিয়েছেন। করোনা নিয়ে প্রয়োজনীয় আদেশ চেয়ে একটি বেঞ্চ গঠনে অপর দুই আইনজীবীও চিঠি দিয়েছেন। এ ছাড়া ঢাকা বারের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকও প্রধান বিচারপতি বরাবর স্বাস্থ্যবিধি মেনে আংশিকভাবে জজ কোর্ট খোলার আবেদন করেন।

গত ২৩ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, এ পরিস্থিতিতে কঠোর শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে অতি জরুরি বিষয়গুলো শুনানির জন্য ছুটিকালীন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান আপিল বিভাগের চেম্বার কোর্টে বসবেন। তা ছাড়া ছুটিকালীন হাইকোর্ট বিভাগে বিচারপতি ওবায়দুল হাসান অতি জরুরি বিষয়গুলো শুনানির জন্য হাইকোর্ট বিভাগের কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।

অপর বিজ্ঞপ্তিতে সপ্তাহে দুদিন জজ কোর্টও খোলা রাখার সিদ্ধান্ত হয়। এ দুই বিজ্ঞপ্তি জারির পর আইনজীবীরা কোর্ট চালু না করতে আবেদন জানান। এর পরিপ্রেক্ষিতে তা স্থগিত করা হয়।

পরবর্তীকালে ৯ মে ভার্চ্যুয়াল কোর্টের শুনানির জন্য অধ্যাদেশ জারি করা হয়। পরদিন ১০ মে উচ্চ আদালতের সব বিচারপতিদের নিয়ে ভিডিও কনফারেন্সে ফুল কোর্ট সভা করেন প্রধান বিচারপতি।

এরপর উচ্চ আদালতসহ অধঃস্তন আদালতে ভার্চুয়াল শুনানিতে বিজ্ঞপ্তি জারি করে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। তারপর থেকে উচ্চ আদালতসহ সারা দেশে ভার্চুয়াল কোর্টে বিচারকাজ অব্যাহত রয়েছে।

বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী উচ্চ আদালতে রিট, ফৌজদারি ও কোম্পানি আইনসহ বিভিন্ন আইনের অধীনে আবেদনের বিচার কাজ এবং নিম্ন আদালতে শুধু জামিন শুনানি চলছে।

এর মধ্যে দফায় দফায় সাধারণ ছুটিরও মেয়াদ বাড়ানো হয়। সর্বশেষ গত ১৬ মে দেওয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে সাধারণ ছুটির মেয়াদ ৩০ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়। তবে সরকার ৩০ মের পর সাধারণ ছুটি আর বাড়াচ্ছে না। এ অবস্থায় আগামীকাল শনিবার বিচারপতিদের ফুলকোর্ট সভা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।