আইসিইউতে এন্ড্রু কিশোর, কথা বলতে পারছেন না
বরেণ্য সংগীতশিল্পী এন্ড্রু কিশোরের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটেছে। কথা বলতে পারছেন না তিনি। আজ সোমবার সকাল থেকেই তাঁকে অক্সিজেন দিয়ে রাখা হয়েছে। বর্তমানে তিনি নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রয়েছেন- এনটিভি অনলাইনকে এমন তথ্য জানিয়েছেন এন্ড্রু কিশোরের ঘনিষ্ঠ মোমিন বিশ্বাস।
দুপুরে এনটিভি অনলাইনের ফোন পেয়ে কেঁদে ফেলেন মোমেন বিশ্বাস। অশ্রুসজল কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘দুদিন ধরেই দাদার অবস্থা ভালো নয়। সকাল থেকে অবস্থার আরো অবনতি হয়েছে। তিনি কথা বলতে পারছেন না। তাঁর অবস্থা ভালো নয়। বর্তমানে তাঁকে অক্সিজেন দিয়ে রাখা হয়েছে। তিনি আইসিইউতে আছেন। দাদার জন্য আপানারা সবাই দোয়া করবেন। এখন ওপরওয়ালা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। একমাত্র ওপরওয়ালাই উনাকে বাঁচাতে পারেন।’
দীর্ঘ নয় মাস পর গত ১১ জুন সিঙ্গাপুর থেকে দেশে ফেরেন এন্ড্রু কিশোর। তবে করোনার কারণে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পাচ্ছেন না বলে এর আগে এনটিভি অনলাইনকে জানিয়েছিলেন মোমিন বিশ্বাস।
উন্নত চিকিৎসার জন্য গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে দেশ ছাড়েন এন্ড্রু কিশোর। বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ১৮ সেপ্টেম্বর তাঁর শরীরে ক্যানসার ধরা পড়ে। এরপর তাঁকে কেমোথেরাপি দেওয়া হচ্ছিল। সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক লিম সুন থাইয়ের অধীনে তাঁর চিকিৎসা হয়।
এন্ড্রু কিশোরের জন্ম রাজশাহীতে। সেখানেই কেটেছে তাঁর শৈশব ও কৈশোর। এন্ড্রু কিশোর প্রাথমিকভাবে সংগীতের পাঠ শুরু করেন রাজশাহীর আবদুল আজিজ বাচ্চুর কাছে। একসময় গানের নেশায় রাজধানীতে ছুটে আসেন। মুক্তিযুদ্ধের পর তিনি রবীন্দ্রসংগীত, নজরুলসংগীত, আধুনিক গান, লোকগান ও দেশাত্মবোধক গানে রেডিওর তালিকাভুক্ত শিল্পী হন।
বাংলা গানের কিংবদন্তি এই সংগীতশিল্পী ‘প্লেব্যাক সম্রাট’ হিসেবেও পরিচিত। বাংলা চলচ্চিত্রের গানে তাঁকে বলা যেতে পারে এক মহাসমুদ্র। কয়েক দশক ধরে সেই সমুদ্রে সাঁতার কেটে চলেছেন শ্রোতারা। ‘জীবনের গল্প আছে বাকি অল্প’, ‘হায়রে মানুষ রঙিন ফানুস’, ‘ডাক দিয়াছেন দয়াল আমারে’, ‘আমার সারা দেহ খেয়ো গো মাটি’, ‘আমার বুকের মধ্যখানে’, ‘পৃথিবীর যত সুখ আমি তোমারই ছোঁয়াতে খুঁজে পেয়েছি’, ‘সবাই তো ভালোবাসা চায়’, ‘বেদের মেয়ে জোছনা আমায় কথা দিয়েছে’, ‘তুমি আমার জীবন আমি তোমার জীবন’, ‘ভালো আছি ভালো থেকো’, ‘তুমি মোর জীবনের ভাবনা’, ‘চোখ যে মনের কথা বলে’সহ অসংখ্য শ্রোতাপ্রিয় গান রয়েছে তাঁর।
এন্ড্রু কিশোরের স্ত্রী ও দুই সন্তান রয়েছে। প্রথম সন্তানের নাম সংজ্ঞা আর দ্বিতীয় জনের নাম সপ্তক।