আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে ছিনতাই, গ্রেপ্তার চার
গাজীপুরে গাড়ি চুরি ও দোকান লুটে জড়িত সন্দেহে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) লালবাগ গোয়েন্দা (ডিবি) বিভাগ। গতকাল শনিবার গাজীপুরে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে লালবাগ বিভাগের সংঘবদ্ধ অপরাধ ও গাড়ি চুরি প্রতিরোধ টিম। পুলিশ বলছে, তারা ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়েও ছিনতাই করত।
রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে আজ রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার।
গ্রেপ্তার হওয়া চারজন হলো সিদ্দিকুর রহমান, নুরু মিয়া, হেমায়েত হোসেন ওরফে হিমু ও আবুল বাশার। গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে একটি প্রাইভেটকার, একটি মোটরসাইকেল, একটি তালা কাটার কার্টার, একটি লাগেজ, ১৯টি কাটা তালা, ছয়টি অ্যান্ড্রয়েড ডেমো মোবাইল ফোন, ১৬টি এয়ারটেল সিম, দুটি ডেবিট কার্ড ও চারটি এনআইডি কার্ড উদ্ধার করা হয়।
এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, মিরপুর এলাকায় চুরির ঘটনায় গত ৬ জানুয়ারি মিরপুর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। লালবাগের গোয়েন্দা বিভাগ ওই মামলার ছায়াতদন্ত শুরু করে। সেই মামলার সূত্র ধরেই এ চক্রের চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ চক্রের মূল কাজ হলো গাড়ি ছিনতাই করা। ছিনতাই করা গাড়ি দিয়ে উত্তরাসহ আশপাশের এলাকা আশুলিয়া ও গাজীপুরের বাজার ও দোকানপাট লুট করত তারা।
‘এই চক্রের আরো কিছু সদস্য রয়েছে। তাদের কাজ হলো রাজধানীর বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রাইভেটকার কিংবা মোটরসাইকেল ছিনতাই করা। তারপর সেই গাড়িটি তারা ছিনতাই ও চুরির কাজে ব্যবহার করত। চুরি ও ছিনতাইয়ের কাজ শেষ হলে নিজেরা বাঁচতে কোনো এক নির্জন স্থানে গাড়ি ফেলে রেখে চলে যেত এ চক্রটি।’
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আরো বলেন, এই চক্রটি বিভিন্ন সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয় দিয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় চুরি ও ছিনতাই করে আসছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা ডিবি পুলিশের পরিচয় দিয়ে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায়, বিশেষ করে রাতের বেলায় বিভিন্ন দোকানে চুরি ও ছিনতাই করত। চুরি ও ছিনতাইয়ে যাতে সমস্যা না হয়, সেজন্য তারা রাতের বেলাকে বেছে নিত। রাস্তার পাশে বিভিন্ন দোকানে, বিশেষ করে মোবাইলের দোকানগুলোতে চুরি করত চক্রটি। কোনো দোকানে চুরি করলে সবকিছু নিয়ে নিত, কোনটা আসল আর কোনটা নকল তখন তাদের দেখার সুযোগ থাকত না।
এদিকে, গাড়ি চুরি বা ছিনতাই রোধে গাড়িতে ট্র্যাকার মেশিন ব্যবহার করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন ডিবির এই কর্মকর্তা।
সংঘবদ্ধ অপরাধ ও গাড়ি চুরি প্রতিরোধ টিমের সহকারী পুলিশ কমিশনার মধুসূদন দাস বলেন, ‘গ্রেপ্তারকৃতরা অত্যন্ত কৌশলে দিনের বেলায় ফেরিওয়ালা সেজে মালিক গাড়ি কোথায় রাখেন, কোন দোকান ও বাড়িতে নিরাপত্তাকর্মী নেই এবং চুরি করার আগমন ও প্রস্থান পথ রেকি করত। পরবর্তী সময়ে ওই চক্রটি গভীর রাতে বা সুবিধামতো সময়ে কার্টার দ্বারা বিভিন্ন বাড়ি ও দোকানের তালা কেটে টাকা, গাড়ি, মোবাইলসহ মূল্যবান সামগ্রী চুরি করে দ্রুত গাড়িতে করে পালিয়ে যেত। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। এরই মধ্যে তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।