অবশেষে মুক্তি পেলেন নির্দোষ সেই আরমান
নির্দোষ হয়েও ১০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি হিসেবে প্রায় পাঁচ বছর ধরে কারাগারে থাকার পর মুক্তি দেওয়া হয়েছে পল্লবীর বেনারসি পল্লীর কারিগর আরমানকে । আজ বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে হাইকোর্টের নির্দেশে আরমানকে মুক্তি দেওয়া হয়। এ সময় কারা কর্তৃপক্ষ আরমানের মায়ের হাতে তাঁকে তুলে দেয়।
গতকাল বুধবার জেল কর্তৃপক্ষের কাছে আরমনের মুক্তির কাগজ আসে। এরপর যাচাই বাছাই শেষে আজ দুপুরে তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়। মুক্ত হওয়ার পর আরমানকে কাছে পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তাঁর মা বানু।
সোনালী ব্যাংকের ঋণ জালিয়াতির ঘটনায় ২৬ মামলার ভুল আসামি পাটকল শ্রমিক জাহালম প্রায় তিন বছর কারাভোগের পর উচ্চ আদালতের আদেশে মুক্তি পান। একটি জাতীয় দৈনিকে গত ১৮ এপ্রিল এ রকম আরেক ‘জাহালমের’ ঘটনা প্রকাশিত হয়। মাদক মামলায় ১০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত শাহাবুদ্দিন বিহারির পরিবর্তে আসামি হিসেবে কারাগারে কাটান ‘নির্দোষ’ আরমান।
প্রকাশিত এ প্রতিবেদন যুক্ত করে একটি মানবাধিকার সংগঠনের পক্ষে হাইকোর্টে রিটটি করে ‘ল’ অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশন।
পরে ২০১৯ সালের ২৩ এপ্রিল হাইকোর্ট মামলার নথি তলব করে রুল জারি করেন। রুলে আরমানকে আটক রাখা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তাঁকে কেন মুক্তি দেওয়া হবে না, তাঁকে হাইকোর্টে হাজির করার কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং তাঁকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না- তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। সেই রুলের চূড়ান্ত শুনানির পর গত ৩১ ডিসেম্বর রায় ঘোষণা করা হয়।
ওই পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, পল্লবীর বেনারসি কারিগর বিহারি আরমান নির্দোষ হয়েও ১০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি হিসেবে ২০১৬ সালের ২৭ জানুয়ারি থেকে কারাভোগ করছেন। রাজধানীর পল্লবী থানার একটি মাদক মামলায় ১০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি মাদক কারবারি শাহাবুদ্দিন বিহারি এ মামলার প্রকৃত আসামি। কিন্তু ওই পরিচয়ে তার পরিবর্তে সাজাভোগ করছেন নির্দোষ আরমান।
শুধু বাবার নামে মিল থাকায় পুলিশ আরমানকে গ্রেপ্তার করে শাহাবুদ্দিন নামে আদালতে সোপর্দ করেছে বলে অভিযোগ করে তাঁর পরিবার।
অন্যদিকে, প্রকৃত আসামি শাহাবুদ্দিন কারাগারের বাইরে দিব্যি মাদক কারবার চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে।