অনেক সাংবাদিককে আজ নির্যাতন করা হচ্ছে : মির্জা ফখরুল
আওয়ামী লীগ সরকার গণতন্ত্রের মুখোশ পরে প্রকৃতপক্ষে এক নেত্রীর শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে অংশ নিয়ে এ মন্তব্য করেন তিনি। ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশের সভাপতি ও সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক রুহুল আমিন গাজীকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘রুহুল আমিন গাজীকে একটা মিথ্যা মামলায়, মিথ্যা অপবাদে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুধু একটি বিষয় নয়, অনেক সাংবাদিককে আজ নির্যাতন করা হচ্ছে, নিপীড়ন করা হচ্ছে, সাংবাদিকদের হত্যা করা হয়েছে। সাংবাদিক হত্যার কোনো বিচার হয় না। আজ সংবাদিকরা লিখতে ভয় পান। যে আইন করা হয়েছে, সেই আইন প্রয়োগ করার কারণে সাংবাদিকরা লিখতে সাহস করেন না। ভিন্নমতকে স্তিমিত করে দেওয়ার জন্য সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ এবং সাধারণ মানুষ যাঁরা ভিন্নমত পোষণ করেন, লেখালেখি করেন, প্রচারমাধ্যমে যাঁরা কথা বলেন, তখন তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আজকে প্রমাণিত হয়ে গেছে এ সরকার গণতন্ত্র বিশ্বাস করে না। শুধু জনগণকে বোকা বানানোর জন্য, গণতন্ত্রের মুখোশ পরে একদলীয় শাসনব্যবস্থা, প্রকৃতপক্ষে এক নেত্রীর শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছে। আমরা অনেক কিছু করেছি। মিছিল-মিটিং, হরতাল করেছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমরা এই সরকারের টনক নড়াতে পারিনি। রাষ্ট্র পরিচালনায়, দেশের মানুষের সমস্যা সমাধানে, দেশের মানুষের কল্যাণে সমস্ত কিছুতেই এই সরকার সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে।’
করোনা পরিস্থিতি প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ভয়াবহ করোনা আমাদের সবার মুখে মুখে ছড়িয়ে দিয়েছে। করোনা সারা বিশ্বের সবচেয়ে বড় সমস্যা। সেই করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। শুধু ব্যর্থ নয়, তারা জেনেশুনে করোনাভাইরাসকে ব্যবহার করে দুর্নীতি-লুটপাটের পাহাড় গড়ে তুলেছে।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘সারা দেশে ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করা হয়েছে। বন্দুকের জোরে, ক্ষমতার জোরে, রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে তারা ক্ষমতায় বসে আছে। আজ বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হয়ে পড়েছে। এই সরকারের ব্যর্থতার কারণে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান হয়নি। রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান করতে এই সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। আমরা পরিষ্কার করে বলতে চাই, এ ধরনের অন্যায়, অত্যাচার, নির্যাতন আর সহ্য করা হবে না। অনেক হয়েছে। এখন পরিষ্কার করে বলতে চাই, অবিলম্বে পদত্যাগ করুন। জনগণের ওপর ভরসা করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। নয়তো জনগণের যে উত্তাল ঢেউ সৃষ্টি হবে, সেই ঢেউয়ে আপনারা ভেসে যাবেন।’
মানববন্ধনে আরো উপস্থিত ছিলেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) একাংশের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলামসহ বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।